নিজস্ব প্রতিবেদক:
অসহায় মানুষদের পাশে গিয়ে তাদের সমস্যার সমাধান করা, দলের হয়ে যে কোন অনুষ্ঠানে হাজির থাকা, এর মাঝেই স্বামী সন্তান সংসার সামলানো চাট্টিখানি কথা নয়। তবে এর চেয়ে কঠিন কাজ লেখাপড়া শেষ করে একজন নারী হয়ে বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় নিজের মেধা-যোগ্যতার স্বক্ষর রেখে বানিজ্যিক গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তি ( সিআইপি) হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারা; যা নি:সন্দেহে একজন নারীর জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া। এমন নারীরাই হাজারো নারীর জন্য পদপ্রদর্শক হয়ে থাকেন।
বলছিলাম সেলিনা ইসলাম (সিআইপি)’র কথা। যিনি বর্তমানে অসহায় মানুষদের সেবা করা আর দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক কাজের মধ্য দিয়ে প্রতিটা দিন পার করেন। অনেকের কাছে তিনি স্বপ্নদ্রষ্টা, অনেকের কাছে তিনি দেবদূত। যোগ্যতা-দক্ষতা আর মেধা মননে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের মাঝে নিজেকে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আর এখন আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন সেলিমা ইসলাম (সিআইপি)। কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের কাছে আস্থা, নির্ভরতা আর ভালোবাসার মানুষ হিসেবেই পরিচিত।
ভালোবেসে কেউবা ডাকেন মা-কেউ ডাকেন আপা । তার জীবন দর্শনটাও সুন্দর, একা নয় বরং সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে চান তিনি।এক জীবনে অনেক কিছুই পেয়েছেন। ব্যক্তি জীবনে চাওয়া পাওয়ার আর কিছু নেই। তবে আমৃত্যু পেতে চান অসহায় দরিদ্র মানুষের ভালোবাসা।
আর এ জন্যই পিছিয়ে থাকা মেঘনা উপজেলাকে সারা দেশের মধ্যে উন্নত যোগাযোগ সম্পন্ন-দারিদ্র্যমুক্ত, শিক্ষা-তথ্য প্রযুক্তিময় সমৃদ্ধ একটি জনপদ হিসেবে গড়ে তুলতে চান। তিনি বিশ্বাস করেন, কুমিল্লার মেঘনা একদিন মডেল উপজেলা হিসেবে পুরো দেশের মধ্যে পরিচিতি লাভ করবে এবং অবশ্যই সে দিন খুব বেশী দূরে নয়।
কথা হয় কুমিল্লা জেলা উত্তর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি, সেলিনা-শহিদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সেলিনা ইসলাম (সিআইপি)’র সাথে। তিনি বলেন, পারিবারিকভাবেই উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের একজন কর্মী। আর তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশে অনুপ্রাণিত।
কুমিল্লা মেঘনা উপজেলার সোনাকান্দা গ্রামের মরহুম হাজী মুজিবুর রহমানের মেয়ে আমি। স্বভাবতই মেঘনা উপজেলাবাসীর প্রতি আমার একটা আত্মিক টান কাজ করে। মেঘনাবাসীর প্রতি আমার ভালোবাসা-ভালোলাগা কাজ করে তেমনি আমি মেঘনা উপজেলাবাসীর প্রতি দায়বদ্ধতাও অনুভব করি। আর সেই মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেই আমি গত ৭ বছর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত থেকে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি রয়েছি।
দীর্ঘ সময় দেশের বাইরে থেকে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছি। কারণ আমি বিশ্বাস করি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো যাবে না। এই আমি দীর্ঘ বছর দেশের বাইরে থাকলেও আমার উপজেলাবাসীর প্রতি আমার আকুন্ঠ ভালোবাসা কমেনি। মেঘনার অসহায় মানুষদের জন্য নিয়মিত শিক্ষা, চিকিৎসা, গৃহহীনদের গৃহনির্মাণ করে দেয়া, নিয়ম করে প্রতি ঈদে নিজের আয়ে গ্রামের মানুষের জন্য নতুন পোষাক, সেমাই, চিনি বিতরণ, অসহায় দরিদ্র পরিবারের ভরণপোষণের জন্য বহু অসহায় মানুষকে রিক্সা-অটোরিক্সা, নারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য সেলাই মেশিন কিনে দেয়া – এগুলোই এখন আমার কাজ।
মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মানে বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি মসজিদ মাদ্রাসা ও এতিমখানায় নিয়মিত সহযোগিতা করে আসছি। মানুষের সেবা করার মাঝে যে ঐশ্বরিক প্রশান্তি রয়েছে তা আর অন্য কিছুর মাঝে নেই। আর তাই আর্তমানবতার সেবা শুধু মেঘনা উপজেলাতে সীমাবদ্ধ রাখিনি। অসহায় রোহিঙ্গাদের মাঝে খাবার বিতরণ –চিকিৎসা সেবাসহ আর্থিক সহযোগিতা করেছি।
সেলিনা ইসলাম জানান, প্রতি বছরই নিজের এলাকাসহ দেশের উত্তরবঙ্গে শীর্তাতদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করি। মেঘনা নিম্নাঞ্চল হওয়ায় নদীভাঙ্গণ রোধসহ ভাঙ্গা রাস্তাঘাট সংস্কারে আমি ব্যক্তিগত অর্থায়নে কাজ করে চলেছি।
সেলিনা ইসলামের জীবনে অন্য রকম ভালো লাগার কথা জানান। বানিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ‘সিআইপি’ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের স্বীকৃতি প্রদানটিকে নিজের ব্যক্তি জীবনের অন্যমত সেরা অর্জণ হিসেবে বিবেচনা করেন। যখন তিনি দেখেন নানা প্রতিকূলতার মাঝে একজন নারী (সিআইপি) ‘বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে দেশের সরকার তাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন তখন এক অন্য রকম ভালো লাগায় তার মনপ্রাণ ভরে উঠে। সেলিনা ইসলাম জানান, কুয়েতে প্রতিষ্ঠিত মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানীর পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন।
বর্তমানে ১৬ হাজার বাংলাদেশী কর্মরত রয়েছেন ওই প্রতিষ্ঠানে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে অর্জিত রেমিটেন্সসহ ওয়েজ আরনার বন্ডে বিনিয়োগ দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বড় ভূমিকা রাখছে; তখন সত্যিই বড় ভালো লাগে। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে পারছি সেটা ভাবলেই অনেক ভালো লাগার বিষয়।।
তবে আমি মানুষকে ভালোবাসতে চাই-অসহায়দের সহায় হতে চাই। আর নিশ্চয়ই আর্তমানবতার সেবার মাঝে রয়েছে ঐশ্বরিক প্রশান্তি। আমৃত্যু মানবসেবার মধ্য দিয়ে আমি সেই ঐশ্বরিক প্রশান্তি অনুভব করি।
Leave a Reply