আবু সুফিয়ান রাসেল:
নেউরা গরু বাজার। জেলার সর্ববৃহৎ কোরবানির পশু কেনা বেচার হাঁট হিসাবে পরিচিত। যা কুমিল্লা শহরতলীর নেউরা দাখিল মাদরাসার মাঠ থেকে নব্বইয়ের দশক থেকে যাত্রা শুরু করে।শহর সংলগ্ন ও যাতায়াত সুবিদা থাকায় অল্প সময়ে সুনাম লাভ করে বাজারটি। সময়ের আর্বতনে বাজারটি নেউরা ছেড়ে, দক্ষিণ ঢুলিপাড়া এসে কেন্দ্র বেঁধেছে। বিশাল এ বাজার সম্পূর্ণ সড়কের উপর, তাই আশেপাশের ১১ টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতসহ নিয়মিত চলাচল সমস্যা তৈরি হয়।
দক্ষিণ সিটির মানুষের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল, রাজগঞ্জ, কান্দিরপাড়, চকবাজার, টমচমব্রীজ, শহরের সকল স্কুল-কলেজে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক ঢুলিপাড়া নেউরা ভাড়া দিশাবন্দ সড়ক। এ সড়কে ঢুলিপাড়া, নেউরা, রসূলপুর, সৈয়দপুর, নোয়াপাড়া, রাজাপাড়া, দিশাবন্দ, লক্ষীনগর, কাজীপাড়া, আবাসন প্রকল্প, লইপুরা গ্রামের মানুষের শহরে প্রবেশের পথ। এছাড়া দক্ষিণ কুমিল্লার সাথে মহানগরী ও আদর্শ সদর থেকে সদর দক্ষিণে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা নেউরা সড়ক। কোরবানীর পূর্বে ধারাবাহিক ভাবে এ সড়কে গরু বাজার চলে কয়েক দিন। ফলে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।
ইপিজেড কর্মী লায়লা পারভীন জানান, আমি রাজাপাড়া ভাড়া বাসায় থাকি। বাসা থেকে ইপিজেড পকেট গেইট আসতে ৫ টাকা ভাড়া লাগে। যখন এখানে গরু বাজার থাকে তখন দিশাবন্দ- উনাইশার হয়ে ২নং গেইটে বা দিশাবন্দ-কাজীপাড়া-জাঙ্গালিয়া, টমচমব্রীজ হয়ে ১নং গেইটে আসতে হয়। দেখা যায় তখন ভাড়া ৩০ টাকা চলে যায়। এবং প্রচুর সময় অপচয় হয়।
কুসিক ১৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্ধা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন অভিযোগ করে বলেন , গরু বাজারের সময় আবর্জনা, দূগর্ন্ধের ফলে এলাকায় বসবাস ও এ রাস্তায় যাতায়াত করতে অনেক কষ্ট হয়। বাজার কমিটি এ কাজটুকু করেন না। বাজার চলাকালিন সময়ে দু’দিকে বাজারের লাঠিয়াল বাহিনী থাকে যারা গাড়ি চলাচলে বাঁধা তৈরি করে, এবং রাস্তা বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয় কাউন্সিলর ও আওয়ামীলীগ নেতা মো. জাকির হোসেন বলেন, এ বিষয়ে বাজার কমিটির সাথে আমি কয়েকবার আলোচনা করেছি বিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছেন না। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটিতে বাজার হওয়ার ফলে মানুষের অনেক কষ্ট হয়। প্রথম দিনে মাদরাসা বাজারের আয়ের একটা অংশ পেত। এবং বাজারটা মাদরাসার নামেই ছিলো। বর্তমানে এটা আর নেই। আমি কুসিককে জানিয়েছি। আমি এটাও পরামর্শ দিয়েছি, গুরু বাজার থেকে আধা কিলো দক্ষিণে পুরাতন বিমান বন্দর মাঠ খালি। এখানে বাজারটা করলে আরো জমজমাট হবে। মানুষ ও কষ্ট থেকে বাঁচবে।
কুসিক প্রশাসনিক কর্মকার্তা ও বাজার বিষয়ক (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মো. হারুনুর রশিদ বলেন, কুসিক থেকে চৌয়ারা বাজার, চকবাজার পশুর হাঁটের জন্য বাৎসরিক ইজারা দেওয়া হয়। এবং অস্থায়ীভাবে চাঙ্গিনী পশুর হাঁটের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। এ তিনটি বাজার ছাড়া কুসিক থেকে আর কোন পশুর হাঁটের অনুমোদন নেই।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম পড়–য়া জানান, নেউরা গরু বাজারের ইজারা সিটি কর্পোরেশন থেকে দেওয়া হয়নি। আমাদের দৃষ্টিতে এটি অবৈধ বাজার। গতবছরও জেলা প্রশাসক মহোদয়কে চিঠির মাধ্যমে অবগত করা হয়েছে। আশা করি সংশ্লিষ্ট সবাই মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে বিষয়টি বিবেচনা করবেন ।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃ আবুল ফজল মীর বলেন, স্কুল ও রাস্তায় পশুর হাঁট বসানো সরকারি নিয়মের বিপরীত। বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। সবার আন্তরিকতায় একটি যৌথ উদৌগ গ্রহণ করা যেতে পারে, যা সকলের জন্য কল্যাণ কর হবে।
Leave a Reply