অনলাইন ডেস্ক:
কুমিল্লার ১১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পদশালী বরুড়ার প্রার্থী জাকারিয়া তাহের সুমন। তার এবং তার স্ত্রীর সম্পদ রয়ে অন্তত ২২৩ কোটি টাকার। আর সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে কুমিল্লা-১ ও ২ আসনের প্রার্থী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ও তার স্ত্রীর।
দু’জনের অস্থাবর সম্পদ হিসেবে সাড়ে ৮ লাখ ৫৩ হাজার ১৪২ পাউন্ড বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে। বাংলাদেশী টাকায় এ পরিমাণ দাঁড়ায় ১০ কোটি ৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।
কুমিল্লার দেবীদ্বারের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীর কোন স্থাবর সম্পদ নেই। সবই তার স্ত্রীর নামে। স্ত্রীর নামে স্থাবর সম্পদ রয়েছে ৩ কোটি ২৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮৯০ টাকার। কুমিল্লা -১ দাউদকান্দি মেঘনা ও কুমিল্লা-২ হোমনা তিতাস এই দুই আসনে দাখিল করা হলফনামায় দেখা গেছে ড. খন্দকার মোশাররফের চেয়ে তার স্ত্রী বিলকিস মোশাররফের সম্পদের পরিমাণ সমান সমান।
ড. খন্দকার মোশাররফের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৬ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার ২৭৯ টাকা আর তার স্ত্রী বিলকিস মোশাররফের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৭ কোটি ৩৮ লাখ ৭ হাজার ৯৪২ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ড. মোশাররফের রয়েছে ৬ কোটি ৭১ লাখ ৪৪ হাজার ৯৩৪ টাকার সম্পদ আর তার স্ত্রী বিলকিস মোশাররফের রয়েছে ৫ কোটি ৮৪ লাখ ৬৪ হাজার ২১৪ টাকার স্থাবর সম্পদ।
দায় দেনার মধ্যে ড. মোশাররফের রয়েছে ৬৭ লাখ ৮৩ হাজার ৪০৪ টাকা। হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছেন তাঁর আয়ের উৎস কৃষিখাত থেকে আয় ১ লাখ ৩৫ হাজার আর ভাড়া বাবদ আয় ১ কোটি ৬৬ হাজার ১১৬ টাকা। ব্যাংক ও আমানত সুদ থেকে আয় ৭ লাখ ৭৮ হাজার ৩২৪ টাকা। হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছেন ১২টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
হলফ নামায় ড. মোশাররফের নামে ৪ লাখ ২ হাজার ৭১ পাউন্ড এবং ৪ লাখ ৫১ হাজার ৭১ পাউন্ড দেখানো আছে। দু’জনের অস্থাবর সম্পদ হিসেবে সাড়ে ৮ লাখ ৫৩ হাজার ১৪২ পাউন্ড বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে। বাংলাদেশী টাকায় এ পরিমাণ দাঁড়ায় ১০ কোটি ৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। এই পাউন্ডের মধ্যে আবার তার স্ত্রীর ৪৯ হাজার পাউন্ড বেশি। কুমিল্লা-৩ মুরাদনগর আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কে এম মুজিবুল হকের অস্থাবর সম্পদ ১ কোটি ৮৭ লাখ ৪৪ হাজার ৯৩৫ টাকার।
কিন্তু তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ আরো বেশি ৪ কোটি ২১ লাখ ৮৫ হাজার টাকার। ব্যাংকের কাছে দেনা রয়েছে তার ৩৯ কোটি ৯৯ লাখ ৫৩ হাজার টাকার। ব্যবসা থেকে তিনি আয় করেন বছওে ৫০ লাখ ৯৫ হাজার ২ শ টাকার। কুমিল্লা-৪ দেবীদ্বার আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীর অস্থাবর সম্পদ ১ কোটি ৮ লাখ ৩ হাজার ৮৭ টাকার।
তার স্ত্রী মাজেদা মুন্সীর অস্থাবর সম্পদ ১ কোটি ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৩৪ টাকার। মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীর কোন স্থাবর সম্পদ নেই। সবই তার স্ত্রীর নামে। স্ত্রীর নামে স্থাবর সম্পদ রয়েছে ৩ কোটি ২৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮৯০ টাকার। মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীর পারিতোষিক আয় বছরে ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বর্তমানে তিনি ১৭টি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত।
কুমিল্লা-৫ বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী শওকত মাহমুদেও নিজ নামে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ৫৭ লাখ ৩২ হাজার ২৩৭ টাকার। স্ত্রীর নামে কোন অস্থাবর সম্পদ নেই। আবার শওকত মাহমুদের নামে কোন স্থাবর সম্পদ নেই। স্ত্রী নামে স্থাবর সম্পদ রয়েছে ৬ লাখ ৯৬ হাজার টাকার।
ব্যবসা থেকে বছরে ৬লাখ এবং শেয়ার ও ব্যাংক আমানত খাতে বছওে আয় ১৯ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৭ টাকা। কুমিল্লা-৬ সদর আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিনের অস্থাবর সম্পদ ১৭ কোটি ৬ লাখ ৮১ হাজার ৭৪৭ টাকার। তার স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদ ৯ কোটি ৮১ লাখ ৪৬ হাজার ৪৩৮ টাকার।
আমিনুর রশিদ ইয়াছিনের স্থাবর সম্পদ রয়েছেন ২ কোটি ৬০ লাখ ২৪ হাজার ৫৮৫ টাকার আর স্ত্রীর নামে স্থাবর সম্পদ ২৯ লাখ ৫৬ হাজার ৫ শ টাকার। আমিনুর রশিদ ইয়াছিনের কোন দায় দেনা নেই। শেয়ার থেকে তিনি বছরে সর্বোচ্চ ১ কোটি ২৬ লাখ ১ হাজার ৩৯১ টাকা। চাকুরি (অনুতোষিক) খাতে বছরে আং ১৮ লাখ টাকা। ব্যবসা থেকে তার কোন আয় নেই।
কুমিল্লা-৭ চান্দিনা আসনে এলডিপির প্রার্থী রেদোয়ান আহমেদের অস্থাবর সম্পদ আছে ২ কোটি ৪৬ লাখ ৮৩ হাজার ৯৮ টাকার। তার স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদ আছে ১ কোটি ৬৮ লাখ ১৪ হাজার ১২০টাকার। রেদোয়ান আহমেদের স্থাবর সম্পদ আছে ১ কোটি ১১ লাখ ১১ হাজার ২১৬ টাকার।
আর স্ত্রীর স্থাবর সম্পদ ৩৬ লাখ ১০ হাজার ৯১৪ টাকার। কৃষি খাত থেকে রেদোয়ান আহমেদের বছওে আয় ৮ লাখ ৫ হাজার ২ শ টাকা এবং কোম্পানীর পরিচালক হিসেবে সম্মানী ভাতা পান বছরে ৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।
কুমিল্লা-৮ বরুড়া আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী জাকারিয়া তাহের সুমনের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ১৩০ কোটি ৫৪ লাখ ১ হাজার ৮৯ টাকার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পদ রয়েছে শেয়ার খাতে। জাকারিয়া তাহের সুমনের স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ৮৫ কোটি ৬০ লাখ ৩৫ হাজার ৫৫৫ টাকার।
জাকারিয়া তাহের সুমনের স্থাবর সম্পদ রয়েছে ৫ কোটি ৬৩ লাখ ৬৬ হাজার ১৯৭ টাকার। আর স্ত্রীর নামে স্থাবর সম্পদ রয়েছে ৩ কোটি ৬৬ লাখ ৫৫ হাজার ২৮১ টাকার। তিনি সম্মানী ভাতা হিসেবে বছরে ৮৪ লাখ টাকা এবং শেয়ার খাতে বছরে ২ কোটি ২৭ লাখ ৫১ হাজার ৬৩২ টাকা আয় করেন।
কুমিল্লা-৯ লাকসাম মনোহরগঞ্জ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কর্নেল অব. আনোয়ারুল আজিমের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৮ হাজার ২৭৬ টাকার আর স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ২ কোটি ৪ লাখ ৯ হাজার ৩৪৭ টাকার। আনোয়ারুল আজিমের স্থাবর সম্পদ রয়েছে ৭৮ লাখ ৪ হাজার ৪৩১ টাকার। আর স্ত্রীর নামে ১ কোটি ১২ লাখ ২৯ হাজার ৪৭০ টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে। চাকুরি থেকে তিনি বছওে ১০ লাখ ১৪ হাজার টাকা আয় করেন।
কুমিল্লা-১০ নাঙ্গলকোট লালমাই সদর দক্ষিণ উপজেলা আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আবদুল গফুর ভূইয়ার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৭ টাকার। স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ১ কোটি ৩১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬৩ টাকার। আর আবদুল গফুর ভূইয়ার স্থাবর সম্পদ রয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯ শ টাকার। অপর দিকে স্ত্রীর নামে স্থাবর সম্পদ রয়েছে ৩ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ১১৫ টাকার। ব্যবসা থেকে আবদুল গফুর ভূইয়ার আয় বছওে ৯ লাখ ৩৮ হাজার ২৪৫ টাকা।
কুমিল্লা-১১ চৌদ্দগ্রাম আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জামায়াত নেতা ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের অস্থাবর সম্পদ ১ কোটি ৭৪ লাখ ৮৮ হাজার ৩০৭ টাকার। ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ ১ কোটি ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৭৪৬ টাকার।
ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের স্থাবর সম্পদ রয়েছে ২৭ লাখ ১৬ হাজার ৮৭০ টাকার আর স্ত্রীর নামে স্থাবর সম্পদ রয়েছে ৩ কোটি ২৮ লাখ ১২ হাজার ৫ শ টাকার। ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের নগদ অর্থ রয়েছে ১ কোটি ২১ লাখ ১৩ হাজার ৬০৩ টাকা। ব্যবসা থেকে তিনি বছওে আয় করেন ৫ লাখ ৬৪ হাজার ১৩৪ টাকা। স্ত্রীর চাকুরী থেকে বছরে আয় ৭ লাখ ৬২ হাজার ৮৪০ টাকা।
Leave a Reply