চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার চান্দিনায় জমিতে পানি দেয়ার জের ধরে মনির হোসেন (২৭) নামের ১ যুবককে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শুক্রবার মনির হোসেনের চাচা মোহাম্মদ আলী বাদি হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে ১টি মামলা দায়ের করেছে।মনির হোসেন উপজেলার মাধাইয়া ইউনিয়নের ছোট কলাগাঁও গ্রামের আ.মান্নানের ছেলে।সবজি ক্ষেতে পানি দেয়ার সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একই ইউনিয়নের বড় কলাগাঁও গ্রামের বাশারসহ তার সাথে থাকা ৬ জন সাঙ্গুপাঙ্গু মনির হোসেনকে চাপাতি দিয়ে কুপোঘাত ও তার মা’কে রড দিয়ে বেধরক মারতে থাকে।মনিরের শরীরে বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তাকে দীর্ঘক্ষণ পেঠানোর পর তার মৃত্যুর আশঙ্কায় হামলাকারীরা মনিরকে মূমূর্ষ অবস্থায় রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন মনির ও তার মায়ের আর্তনাদ শুনে এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে। পরে মনিরসহ তার মা কে প্রথমে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মনিরকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ ব্যাপারে চান্দিনা থানায় ৮ জন এজহারভুক্তসহ আরো ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২ জনকে আটক করেছে বলেও জানা যায়।
মামলার বাদী মোহাম্মদ আলী জানান,বাশার ও হাছিব এলাকার চিহ্নিত ডাঙ্গাবাজ ও উৎশৃংঙ্খল প্রকৃতির লোক।তারা এলাকায় থেকে নিজ এলাকাসহ পাশের এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে থাকে।তাদের অত্যাচারে সর্বস্তরের মানুষ অতিষ্ঠ।গত বৃহস্পতিবার বিকাল আনুমানিক ৫ টার দিকে আমার ভাতিজা মনির হোসেন আমাদের বসত বাড়ীর উত্তর পাশে সবজি ক্ষেতে সেলো মেশিন দিয়ে পানি দেওয়ার সময় সন্ত্রাসী হাছিব,শাহজালাল ও আরাফাত সবজি ক্ষেতে এসে আমার ভাতিজার সেলো মেশিনের পাইপ টানাটানি করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।আমার ভাতিজা তাদের বাঁধা দিলে এ সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়।তারা তখন আমার ভাতিজাকে মারধর করার চেষ্টা করে।কিন্তু স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতির কারণে মারধর করতে না পেরে তারা আমার ভাতিজাকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়।
পরে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে ওই তিনজনসহ আরো ৫/৬ জন উৎশৃঙ্খল যুবক তাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ধারালো চাপাতি,রড ও লাঠিসোঠা নিয়ে বেআইনীভাবে দলবদ্ধ হয়ে আমার বড় ভাই আ.মান্নানের ঘরে অনধিকার প্রবেশ করে ঘরে থাকা আমার ভাতিজা মনির হোসেনকে এলোপাতারি মারপিট শুরু করে।তারা মনিরকে মারতে মারতে ঘর থেকে বের করে উঠানে নিয়ে আসে।উঠানে এনে সন্ত্রাসী বাশার তার হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার উপরের ডান পাশে স্বজোরে কুপ দিলে মনির রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সন্ত্রাসী হাছিব ও রাকিব হাতে থাকা রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মনিরের সমস্ত শরীরে এলোপাতারি বারি মারতে থাকে।সন্ত্রাসী হাছিব মনিরের হাতে থাকা আইফোনটি ছিনিয়ে নেয়।অন্যদিকে সন্ত্রাসী হাছান,শাহজালাল ও রাকিব মনিরের সমস্ত শরীরে কিল ঘুষি মারতে থাকে।মনিরকে রক্ষা করার জন্য আমার ভাবি এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসী হাছিব হাতে থাকা রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ভাবির মাথায় আঘাত করলে তা ফসকে হাতে পড়লে হাড় ভেঙে যায়।তরপরও সকল সন্ত্রাসীরা একসাথে ভাবির শরীরে কিল ঘুষি মারতে থাকে।তারা চিৎকার চেঁচামেঁচি করলে বাড়ির আশেপাশের স্থানীয় লোকজন এসে সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে তাদের উদ্ধার করে।সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলে এই ঘটনার পর যদি কোন মামলা মোকদ্দমা করে তাহলে পরিবারের সকলকে খুন করবে বলে চলে যায়।
সন্ত্রাসীদের হামলায় মনির ও ভাবীকে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় প্রথমে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।কিন্তু মনিরের অবস্থা বেশি আশঙ্কাজনক হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মনিরকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করে।পরে মনিরকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।তার অবস্থা গুরুতর বলে ডাক্তার জানান।
এদিকে বিবাদী পক্ষের সবাই পলাতক থাকায় কারো সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল ফয়সল জানান, এ ঘটনার ব্যাপারে ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।দুই জনকে আটক করে হাজতে পাঠানো হয়েছে।বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply