(আকিবুল ইসলাম হারেছ,চান্দিনা)
কুমিল্লার চান্দিনায় করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করা শতবর্ষী এক বৃদ্ধ সহ উপজেলা প্রশাসনের চতুর্থ শ্রেণীর এক কর্মচারীর করোনা ভাইরাস পজেটিভ এসেছে। এ নিয়ে চান্দিনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯জন এবং তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু ঘটে।
শনিবার (২ মে) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহসানুল হক মিলু।
এদিকে এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত ৮ কর্মচারীর বাসভবন (একটি ডরমেটরি) সহ মহারং গ্রামের একটি বাড়ি লক ডাউন করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা পরিষদে সাধারণ মানুষের যাতায়াত সীমিত করা হয়েছে। এ ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্বপরিবারে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
করোনায় মৃত্যুবরণ করা শতবর্ষী ওই বৃদ্ধ চান্দিনার উপজেলা সদরের মহারং গ্রামের মতিন মুন্সি। আক্রান্ত উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারী (৫২)।
এছাড়া উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের কাশারীখোলা গ্রামের একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী পুরুষ (৬০) জ্বর, কাশি ও শ্বাস-কষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে শুক্রবার (১ মে) দুপুরে মারা যান। স্থানীয়রা খবর পেয়ে লাশ অন্তোষ্টিক্রিয়ায় বাঁধা দেয়। পরে চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. আবুল ফয়সল সহ থানা পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহের পর তার অন্তোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পরে মৃত ব্যক্তির স্ত্রী ও ছেলের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়।
এদিকে শনিবার ওই মৃত ব্যক্তির করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসায় এলাকায় বিষয়টি জানাজানি হয়। এতে জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। অপরদিকে চান্দিনা উপজেলা পরিষদ এর একজন কর্মচারী করোনা পজেটিভ হওয়ায় গত কয়েকদিন ধরে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা, ত্রাণ বিতরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে উপজেলায় যাতায়াতকারীরাও আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্নেহাশীষ দাশ জানান- ওই কর্মচারী উপজেলা চত্বরের ডরমেটরিতে থাকেন। ফলে ৮জন কর্মকর্তা-কর্মচারি ও তাদের পরিবারসহ ওই ডরমেটরিটি লকডাউন করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের এই শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ওই কর্মচারী আমার অফিসে সার্বক্ষণিক কাজ করতেন। তাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমাকে এবং আমার গাড়ি চালককে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। আমি ওই পরামর্শ অনুযায়ী উপজেলা চত্বরের ইউএনও বাসভবনে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত শুক্রবার (১ মে) চান্দিনা উপজেলা সদরের ধানসিঁড়ি আবাসিক এলাকার মা-ছেলে সহ আরও ৩জন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হন। এদের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য। এছাড়া চান্দিনায় গত ১৪ এপ্রিল ১জন প্যাথলজি টেকনেশিয়ান, ১৫ এপ্রিল ১জন এমবিবিএস ডাক্তার, ১জন এক্স-রে টেকনেশিয়ান ও ১জন প্রবাসী করোনা আক্রান্ত হন।
Leave a Reply