আকিবুল ইসলাম হারেছ,চান্দিনা
কুমিল্লায় চান্দিনায় প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে হঠাৎ হানা দেয় কাল বৈশাখী। বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় হঠাৎ ঝড়ো বৃষ্টিতে উপজেলাজুড়ে কালবৈশাখীর তান্ডবে লন্ড-ভন্ড হয়ে গেছে বাড়ি-ঘর, গাছ-পালা ও ফসলী জমি। বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে গেছে বৈদ্যুতিক খুঁটি। ছিঁড়ে গেছে বৈদ্যুতিক তার। বিকেলের পর থেকে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
চান্দিনা উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী বুড়িচং ও দেবীদ্বার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কালবৈশাখীর তান্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে জানা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৈশাখের পড়ন্ত বিকেলে হঠাৎ হানা দেয় কাল বৈশাখী। প্রচণ্ড তুফানের ঘুর্ণিতে অনেক ঘরের চালা আবার কোথাও ঘরসহ উড়িয়ে নিয়ে যায়। অনেক উঁচু গাছ যেন ধনুকের ন্যায় বাঁকা হয়ে মাটিতে লুটে পড়ে। ফসলী মাঠের বোরো ধান সহ সবজি খেতের মাচা ভেঙ্গে পড়ে। বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে বিদ্যুৎ বিছিন্ন হয় জেলার বিভিন্ন এলাকা।
চান্দিনা উপজেলার এতবারপুর গ্রামের আকতার হোসেন জানান, ঝড়ে এতবারপুর গ্রামের খোকন দাসের ২টি ও স্বপন দাসের ১টি ঘর পড়ে যায়। ওই এলাকায় অনেক গাছ-পালা ভেঙ্গে গেছে। উপরে ফেলেছে গাছের গোড়া।
ওই গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ খোকন চন্দ্র দাস জানান, আমরা দুই ভাই। একজন সেলুনে অপরজন চানাচুর বিক্রি করে সংসার চালাই। করোনাভাইরাসের কারণে আমাদেরও কাজ নাই। এমনেতই দুই বেলা খেতে পারি না। এই দুর্যোগের মধ্যে আবার আমাদের ৩টি ঘর পড়ে গেছে। রাতে কোথায় থাকবো, কি করবো? চিন্তা করে উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।
এছাড়া উপজেলার কামারখোলা, পানিপাড়া, এতবারপুর, জিরুআইশ, রসুলপুর, সালচু, ভাকসার, বামনিখোলা, হারং, ছায়কোট-তুলাতলী সহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি-ঘর, গাছ-পালা এমনকি ১০টিরও বেশি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়।
এদিকে পার্শ্ববর্তী বুড়িচং উপজেলার বিভিন্ন এলাকাসহ নিমসার বাজারের অন্তত ২৫টি কাঁচা বাজারের আড়ৎ ব্যাপক ক্ষতি হয়। বুড়িচং উপজেলার দেবপুরে অবস্থিত জাতীয় গ্রীড থেকে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এ আসা বৈদ্যুতের প্রধান লাইনের একাধিক খুটি ভেঙ্গে গেছে। ছিঁড়ে গেছে বৈদ্যুতিক তার।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার দীপক কুমার দেবনাথ জানান- রাত পৌঁনে ৯টা পর্যন্ত দেবপুর থেকে আসা প্রধান লাইনের ৬টি এবং চান্দিনা উপজেলার অন্তত ১০টি খুঁটি ভাঙ্গার খবর আমরা পেয়েছি। এখনও ফোন আসছে এবং আমাদের লোকজন খোঁজ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ লাইন চিহ্নিত করা সহ লাইন সংস্কারের কাজ করছে।
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্নেহাশীষ দাশ জানান- কালবৈশাখী ঝড়ে যেসব পরিবার বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আমরা তাদের তালিকা করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবো। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। তিনি আমাদেরকে আশ্বাস্ত করেছেন।
Leave a Reply