চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
চান্দিনায় কথা কাটাকাটির জের ধরে জাকির হোসেন (৪২) নামের এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।জাকির হোসেন উপজেলার মহিচাইল ইউনিয়নের ছেংগাছিয়া গ্রামের মৃত বাচ্চু মিয়ার ছেলে।সে মহিচাইল ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন।এ ঘটনায় গত সোমবার সন্ত্রাসী হামলার শিকার জাকির হোসেন বাদি হয়ে ৭ জনের বিরুদ্ধে ১টি মামলা দায়ের করেছে। প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা জানায়,গত সোমবার(১১ মে) দুপুরে টিউবওয়েল থেকে পানি নেয়ার সময় জাকির হোসেনের স্ত্রী ও কথিত লাদেন নামে পরিচিত শাজাহানের মায়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শাজাহান ও তার দুই ছেলেসহ তার সাথে থাকা ৬ জন সাঙ্গুপাঙ্গু নিজ ঘরে থাকা জাকির হোসেনকে চাপাতি দিয়ে কুপোঘাত ও তার স্ত্রী’কে রড দিয়ে বেধরক মারতে থাকে।জাকিরের শরীরে বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তাকে দীর্ঘক্ষণ পেটানোর পর তার মৃত্যুর আশঙ্কায় হামলাকারীরা জাকিরকে মূমূর্ষ অবস্থায় রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন জাকির ও তার স্ত্রীর আর্তনাদ শুনে এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে। পরে জাকিরকে প্রথমে চান্দিনা মীম হসপিটালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাকিরকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ ব্যাপারে চান্দিনা থানায় ৭ জন জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে আটক করেছে বলেও জানা যায়। মামলার বাদী জাকির হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান,মেহেদি ও বায়জিদ এলাকার চিহ্নিত ডাঙ্গাবাজ ও উৎশৃংঙ্খল প্রকৃতির লোক।তারা এলাকায় থেকে নিজ এলাকাসহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে থাকে।তাদের অত্যাচারে সর্বস্তরের মানুষ অতিষ্ঠ।
গত সোমবার দুপুরে আনুমানিক ২ টার দিকে আমি আমাদের বসত বাড়ীর উত্তর পাশে জমিতে কাজ করছিলাম।বাড়ীতে এসে দেখি সন্ত্রাসী মেহেদি,মুশফিক ও দেলোয়ার আমার বসত ঘরে হামলা করে টিনের বেড়া কুপিয়ে ঘরে থাকা মূল্যবান আসবাবপত্র ভাঙচুর করছে।আমার স্ত্রী তাদের বাঁধা দিলে এ সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়।তারা তখন আমার স্ত্রীকে মারধর করার চেষ্টা করে।কিন্তু স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতির কারণে মারধর করতে না পেরে তারা আমার স্ত্রীকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে দুপুর ২ টা ১৫ মিনিটের দিকে ওই তিনজনসহ আরো ৫/৬ জন উৎশৃঙ্খল যুবক তাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ধারালো চাপাতি,রড ও লাঠিসোঠা নিয়ে বেআইনীভাবে দলবদ্ধ হয়ে আমার ঘরে অনধিকার প্রবেশ করে আমাকে এলোপাতারি মারপিট শুরু করে।তারা আমাকে মারতে মারতে ঘর থেকে বের করে উঠানে নিয়ে আসে।
উঠানে এনে সন্ত্রাসী মেহেদি তার হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার উপরের বাম পাশে স্বজোরে কুপ দিলে আমি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সন্ত্রাসী মেহেদি ও মুশফিক হাতে থাকা রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার সমস্ত শরীরে এলোপাতারি বারি মারতে থাকে।সন্ত্রাসী মুন্না আমার হাতে থাকা মোবাইল ফোন ও আমার স্ত্রীর স্বর্ণের হার ছিনিয়ে নেয়।অন্যদিকে সন্ত্রাসী শাজাহান,সজিব ও দেলোয়ার আমার সমস্ত শরীরে কিল ঘুষি মারতে থাকে।আমাকে রক্ষা করার জন্য আমার চাচি এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসী বায়জিদ হাতে থাকা রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে চাচির মাথায় আঘাত করলে তা ফসকে হাতে পড়ে।তারা চিৎকার চেঁচামেঁচি করলে বাড়ির আশেপাশের স্থানীয় লোকজন এসে সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে আমাদের উদ্ধার করে।
সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলে এই ঘটনার পর যদি কোন মামলা মোকদ্দমা করে তাহলে পরিবারের সকলকে খুন করবে। প্রত্যক্ষদর্শী ওয়াসিম এর সাথে কথা হলে তিনি জানান,সন্ত্রাসীদের হামলায় জাকিরকে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় প্রথমে চান্দিনা মীম হসপিটালে নেয়া হয়।কিন্তু জাকিরের অবস্থা বেশি আশঙ্কাজনক হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাকিরকে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করে।পরে জাকিরকে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এদিকে বিবাদী পক্ষের সবাই পলাতক থাকায় কারো সাথে যোগাযোগ করা যায়নি। এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল ফয়সল জানান, এ ঘটনার ব্যাপারে ৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।তিন জনকে আটক করে হাজতে পাঠানো হয়েছে।বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply