অনলাইন ডেস্ক:
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। গত ১১ বছরের তুলনায় এবারের ফলাফল ভাল হয়েছে। ফলাফল বিশ্লেষণে এমন তথ্য দেখা গেছে। এবছর পাশের হার ৭৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২ হাজার ৩৭৫ জন শিক্ষার্থী।শতভাগ পাশ করেছে ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১ জনও পাশ করেনি এমন ৩টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা রয়েছে।
১ জনও পাশ করেনি এমন ৩টি প্রতিষ্ঠান হলো- কুমিল্লার দাউদকান্দির বজ্রা স্বদিব এসইপি মডেল কলেজ, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ হজারী হাট স্কুল এন্ড কলেজ, নোয়াখালীর হাতিয়া তমরুদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ। তবে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ১০ জনের কম।
বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর পৌনে ১টার দিকে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো. আসাদুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন।
কুমিল্লা বোর্ডে এইসএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ও জিপিএ ৫ বেড়েছে। আজ বেলা পৌনে একটায় কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের মিলনায়তনে সচিব নূর মোহাম্মদ উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এ তথ্য তুলে ধরেন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায়, ২০১৯ সালে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৯৪ হাজার ৩৬০ জন,যার মধ্যে মোট পাশ করে ৭৩,৩৫৮জন । জিপিএ ৫ পেয়েছে ২,৩৭৫ জন। অসাধুপায় অবলম্বনের দায়ে ৪৫ জন শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়। এছাড়াও চলতি বছর ৩ টি প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষার্থী পাশ করে নি এবং শতভাগ পাস করেছে ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থী।
গত ২০১৮ সালে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ১ লাখ,৩ হাজার ৬৬৬ জন। মোট পাশ করেছিলো ৬৭,৮২০।জিপিএ ৫ পেয়েছিলো ৯৪৪ জন। পাশের হার ছিলো ৬৫.৪২ ভাগ। গত বছর ২ টি প্রতিষ্ঠানের কেউ পাশ করে নি। শতভাগ পাশ করেছিলো ১৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের সচিব নূর মোহাম্মদ জানান, শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সমন্বয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মানোন্নয়নে কাজ করা হয়েওছ। ফলশ্রুতিতে এ বছর গড় পাশের হার ও জিপিএ পাঁচ উভয়ই বেড়েছে। বোর্ডের অধীন ছয় জেলার এইচএসসি পরীক্ষার পাশের হার ও শিক্ষার মানের অগ্রগতির ধারাবাহিকতা রক্ষায় আমরা অঙ্গিকারাবদ্ধ।
বছর অনুষ্ঠিত কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লার জেলার ১ হাজার ৩৮৮টি কলেজের ৯৪ হাজার ৩৬০ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিল। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭৩ হাজার ৩৫৮জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৩৩ হাজার ৩৩২জন এবং ছাত্রী ৪০ হাজার ২৬জন।
এবার পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৩৭৫ জন। বিজ্ঞানে পাশের হার ৮৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। মানবিকে পাশের হার ৭২ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং ব্যবসায়িক শিক্ষা বিভাগে ৭৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
১ জনও পাশ করেনি এমন ৩টি প্রতিষ্ঠান হলো- কুমিল্লার দাউদকান্দির বজ্রা স্বদিব এসইপি মডেল কলেজ, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ হজারী হাট স্কুল এন্ড কলেজ, নোয়াখালীর হাতিয়া তমরুদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ।
শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রকাশিত গত ৫ বছরের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে ২০১৮ সালে পাশের হার ছিল ৬৫ দশমিক ৪২ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছিল ৯৪৪ জন।
ফলাফল বিশ্লেষনে দেখা দেখাগেছে ২০১৭ সালে পাশের হার ছিল ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছিল ৬৭৮ জন। ২০১৬ সালে পাশের হার ছিল ৬৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছিল ১ হাজার ৯১২ জন। ২০১৫ সালে পাশের হার ছিল ৫৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছিল ১ হাজার ৪৫২জন।
ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করবেন যেভাবে
পরীক্ষায় যারা অকৃতকার্য হয়েছেন অথবা কাঙ্ক্ষিত ফল পাননি তাদের জন্য ফল পুনঃনিরীক্ষার সুযোগ রয়েছে। টেলিটক নম্বর থেকে আগামী ১৮ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত এইচএসসি ও সমমানের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করা যাবে। ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে RSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
ফিরতি এসএমএসে ফি বাবদ কত টাকা কেটে নেওয়া হবে তা জানিয়ে একটি পিন নম্বর (পার্সোনাল আইডেন্টিফিকেশন নম্বর-PIN) দেওয়া হবে। আবেদনে সম্মত থাকলে RSC লিখে স্পেস দিয়ে YES লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
প্রতিটি বিষয় ও প্রতি পত্রের জন্য ১৫০ টাকা হারে চার্জ কাটা হবে। যে সব বিষয়ের দুটি পত্র (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র) রয়েছে যে সব বিষয়ের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করলে দুটি পত্রের জন্য মোট ৩০০ টাকা ফি কাটা হবে। একই এসএমএসে একাধিক বিষয়ের আবেদন করা যাবে, এক্ষেত্রে বিষয় কোড পর্যায়ক্রমে ‘কমা’ দিয়ে লিখতে হবে। প্রসঙ্গত, এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৫৮ হাজার ৫০৫। এর মধ্যে ৮টি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এইচএসসিতে পরীক্ষার্থী ১১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৫০। এছাড়া মাদরাসার আলিমে ৮৮ হাজার ৪৫১ এবং কারিগরিতে এইচএসসি (বিএম) ১ লাখ ২৪ হাজার ২৬৪ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
Leave a Reply