অনলাইন ডেস্ক:
কুমিল্লা আদালতে বিচারককের সামনে হ ত্যা মামলার এক আ সামি অপর আসামিকে ছু রিকা ঘাতে হ ..ত্যা ঘটনায় আদালত অঙ্গন ও বিচারকদের যথাযথ নিরাপত্তা প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এক বিচারকের স্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এ রিট দায়ের করেন।
আগামীকাল বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বে ঞ্চে এ রিটের শুনানি হবে।
অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, সোমবার আদালত কক্ষে বিচারকের সামনে যেভাবে হ ত্যা করা হয়েছে। বিচারকের স্ত্রী হিসেবে এ ঘটনায় আমি উ দ্বি গ্ন। এ কারণে আমি সমগ্র আদালত অঙ্গন ও বিচারকদের যথাযথ নিরা পত্তা প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছি। রিটে মন্ত্রীপরিষদ সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
দৌড়ে পালাচ্ছিল সবাই- সোমবার বেলা সোয়া ১১টা। কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের কার্যক্রম চলছে। বিচারক বেগম ফাতেমা ফেরদৌস এজলাসের চেয়ারে বসা। ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার কান্দি গ্রামের আবদুল করিম হ.. ত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আসামিদের ডাকা হয়। কিন্তু হঠাৎ ওই হ.. ত্যা মামলার ৬নং আসামি হাসান সবার সামনে পকেট থেকে ধা রা লো ছু রি বের করে একই হ.. ত্যা মামলার ৪নং আসামি ফারুকের পে টে ঢুকিয়ে দেন। জীবন বাঁচাতে দৌড়ে বিচারকের খাস কামরায় আশ্রয় নিলে সেখানে উপর্যুপরি ছু রি কাঘাত করলে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েন ফারুক। পরে কুমেক হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃ.. ত্যু হয়। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক আদালতের বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে আ তঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আদালতের আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা ভ য়ে ছোটাছুটি শুরু করেন। কেউ ঘা ত ককে আটক করতে সাহস না পেলেন না।
এ সময় একটি মা.. দ ক মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসা জেলার বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের এএআই ফিরোজ আহাম্মদ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছো রা চালানোর মুখে ঘা ত কের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেই সঙ্গে ঘা ত ক হাসানকে জাপটে ধরে আদালত পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। এএসআই ফিরোজের এই সাহসিকতার দৃশ্য এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই এই কাজের জন্য তাকে হিরো উপাধি দিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। কারণ ওই ঘা ত ককে তিনি আটক না করলে আরও একাধিক হ.. ত্যা কা ণ্ড ঘটাতে পারতো বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আদালতের আইনজীবী শাহনেওয়াজ সুলতানাসহ অন্য আইনজীবীরা জানান, হঠাৎ এমন ঘটনা দেখে আদালতের বিচারক, কর্মকর্তা, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা নিজেদের প্রা ণ বাঁচাতে চারদিকে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন।
ওই সময় দৌড়ে এসে ঘা ত কের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এএসআই ফিরোজ। ঘা ত ককে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা না গেলে হয়তো আরও কয়েকজনের প্রা ণ হা নি ঘটতো। ঘা ত ককে আটককারী বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘আমি একটি মা.. দ ক মামলায় সাক্ষ্য দিতে ঘটনার সময় আদালত কক্ষে বসাছিলাম। আবদুল করিম হ.. ত্যা মামলার কার্যক্রম শুরু হলে একপর্যায়ে ঘা ত ক হাসান উন্মুক্ত ছো রা হাতে আসামি ফারুককে হ.. ত্যার চেষ্টা চালায়। কিন্তু আসামি ফারুক প্রাণ বাঁচাতে বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশ করে বাঁচার আকুতি জানায়।
এ সময় সেখানে গিয়ে ঘা ত ক তাকে উপর্যুপরি ছু রি কাঘাত করতে থাকে। এতে আদালতের সবাই হতবিহ্বল ও আ ত ঙ্কিত হয়ে পড়েন। কেউ তাকে নিবৃত্ত করার সাহস পাচ্ছিল না। তখন আমি জীবনের ঝুঁ কি নিয়ে ঘা ত ককে জাপটে ধরি। এ সময় আদালতের বিচারক এজলাসে ছিলেন। কুমিল্লা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, এতোটা নিরাপত্তার মধ্যেও আসামি ছু রি নিয়ে কীভাবে আদালতের ভেতরে প্রবেশ করলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মো. সাখাওয়াৎ হোসেনকে প্রধান করে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর এ-সার্কেল) তানভীর সালেহীন ইমন ও ডিআইও-ওয়ান (পুলিশ পরিদর্শক) মো. মাহবুব মোর্শেদকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদন পাওয়ার পর দায়িত্বরত কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘা ত ক হাসানের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হাসান জানিয়েছে, নি হ ত ফারুকের কারণে সে এই হ.. ত্যা (আবদুল করিম) মামলার আসামি হয়েছে। আদালতে আসার পর তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। তাই ক্ষো ভ থেকে এ ঘটনা ঘটিয়েছে হাসান। এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় আরেকটি হ.. ত্যা মামলা হয়েছে।
Leave a Reply