(বারী উদ্দিন আহমেদ বাবর, কুমিল্লা)
কুমিল্লায় হাইওয়ে পুলিশ ও ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা চালকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ২ পুলিশ অফিসার ও ৫ পুলিশ সদস্যসহ ২০ জন আহত হয়েছে। এসময় হাইওয়ে পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করা হয়। শনিবার দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার হাড়ি সর্দার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, মহাসড়কে ব্যাটারি চালিত ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা আটক করাকে কেন্দ্র করে মিয়া বাজার হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে উভয় পক্ষের ২০ জনের মতো আহত হয়। সেসময় মহাসড়কে পুলিশের ডিআইজির নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মো. আবুল ফয়সল। খবর পেয়ে তিনি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
তবে স্থানীয় অটোরিকশা চালকদের দাবী হাইওয়ে পুলিশকে চাঁদা না দেয়ায় পুলিশ আমাদের লোকজনদের ধরে মারধর করে, গাড়ী আটক করে ও গাড়ীর চাবি নিয়ে যায়। পরে টাকা দিলে ছেড়ে দেয়। আমরা এনিয়ে প্রতিবাদ করলে পুলিশ আমাদের কয়েকজনকে ধরে মারে। সেসময় চেয়ারম্যান সাহেব যাচ্ছিলেন আমাদের চিৎকার চেঁছামেচি দেখে দাঁড়ান। তিনি গিয়ে পুলিশের সাথে কথা বলতে চাইলে পুলিশ চেয়ারম্যানকে গালমন্দ করে। আমরা পুলিশের এমন অসৌজন্য মুলক আচরনের প্রতিবাদ জানালে পুলিশ আমাদের উপর লাঠিচার্জ করে। এরপর আমাদের স্বজনেরা এগিয়ে এলে তাদেরও লাঠিচার্জ করা হয়। এতে আমাদের ১০-১২ জনের মতো আহত হয়েছে।
স্থানীয় ঘোলপাশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ বলেন, ভিতরের রাস্তায় চলাচলকারী ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালকদের মহাসড়কে ধরে এনে মারধর করে হাইওয়ে পুলিশ। আজ (শনিবার) একজন প্রতিবন্ধী চালককে ধরে মারধর করে। এ নিয়ে অন্যরা প্রতিবাদ করলে তাদের ৮-১০ জনকেও পুলিশ মারধর করে। এসময় আমি ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। এসব দেখে আমি মহাসড়কের পাশে মোটরসাইকেল রেখে লোকজনের কথা শুনার সময় তার আমার মোটরসাইকেলের পেছনে ধাক্কা দেয় পুলিশের গাড়ি।
এ নিয়ে জানতে চাইলে পুলিশের সাথে আমার বিতন্ডা হয়। এতে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং সংঘর্ষ বেধে যায়। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ১০-১৫জন আহত হয় বলে দাবী করেন তিনি।
চৌদ্দগ্রামের মিয়া বাজার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (আইসি) মনজুরল হক বলেন, আমরা মহাসড়কে যান চলাচল নির্বিঘœ রাখতে মহাসড়কে চলাচল করা সিএনজি ও ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা আটক করি। আজ একটি অটোরিকশা আটক করি। চালক প্রতিবন্ধী দেখে তাকে আবার ছেড়ে দেই। পরে স্থানীয় ঘোলপাশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ এসে আমাদের গাড়ির সামনে তার মোটরসাইকেল রেখে বাধা দেয়। আমরা মোটর সাইকেল সরাতে গাড়ীর হর্ণ বাজালে তিনি আমাদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। এসময় তার সাথে আমাদের তর্ক হয়।
এর এক পর্যায়ে তার শ্যালক মাসুম, সামছু ও আলকাসসহ স্থানীয়রা আমাদের উপর হামলা করে এবং গাড়িতে ভাংচুর চালায়। ওই হামলায় সার্জেন্ট আশিক, এসআই সিরাজুল এবং এএসআই দুলালসহ সাতজন আহত হন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মো. আবুল ফয়সল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি ডিআইজি স্যারের নিরাপত্তা ডিউটিতে ছিলাম। সেসময় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। আমাকে দেখে স্থানীয়রা চলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন হয়। তবে মহাসড়কে ব্যাটারি চালিত ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা আটক করাকে কেন্দ্র করে মিয়া বাজার হাইওয়ে পুলিশ ও ঘোলপাশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদের মাঝে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে স্থানীয়রা এসে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়।
Leave a Reply