(জাগো কুমিল্লা.কম)
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাছিমপুর আর আর ইনস্টিটিউশন। বহুবছরের ঐতিহ্য বহনকারী প্রবিণ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বর্তমান সময়ে নানাহ অনিয়মের ফলে বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন হতে চলেছে বলে অভিযোগ অভিভাবক ও সুশিল সমাজের।
পূর্বের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ কমিটির সকল সদস্যরা বিদ্যালয়টিকে নিজের পরিবারের মতই ভালবাসতেন বলেও তারা জানায়। বর্তমানে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদে ব্যপক পরিবর্তনের ফলে ক্রমেই বিদ্যালয়ের সুনামে নেমে আসে ধস। পবিত্র মাহে রমজানের দীর্ঘ এক মাস সরকারী বন্ধের পর সারা দেশ ব্যাপী ২৩ জুন শনিবার থেকে মাধ্যমিক স্কুলের পাঠদান শুরু হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারনে ঐতিহ্যবাহী মাছিমপুর আর আর ইনস্টিটিউশনে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়।
স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিকট থেকে অভিযোগ পেয়ে শনিবার বেলা ১১টার দিকে সরজমিনে গিয়ে দেখা কুমিল্লা উত্তর জেলা যুব দলের সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক এবং তিতাস উপজেলা যুব লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন সরকারের ছেলের বৌ-ভাত অনুষ্ঠানের জন্য স্কুল মাঠে প্যান্ডেল সাজানো রয়েছে। ক্লাস করতে আসা বিভিন্ন শ্রেণীর শির্ক্ষাথীরা এমন পরিবেশ দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছে। কেন ফিরে যাচ্ছে জানতে চাইলে, তারা বলেন আঙ্কেল আজ (শনিবার) আমাদের স্কুল খোলা ছিলো, কিন্তু এসে দেখি স্কুল মাঠে বিএনপি’র নেতার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান চলবে। স্যার বলছে ক্লাস হবে না। তাই ফিরে যাচ্ছি।
মোবাইল ফোনে মাছিমপুর, বলরামপুর, নাগেরচর, জয়পুর ও কদমতুলি গ্রামের একাধিক অভিভাবক জানান, অতিতে আমরা মাছিমপুর স্কুলে এমন ঘটনা দেখিনি। স্কুল বন্ধ রেখে স্কুল মাঠে সামাজিক অনুষ্ঠান। এবছরই প্রথম দেখলাম। তারা অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যতো দিন এই স্কুলে দায়িত্ব পালন করবে; ততদিন এই স্কুলে নিয়মের কিছুই থাকবে না। এক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকের উদাসিনতাকেও দায়ী করেন এসব অভিভাবক।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলম সরকারের আপন ভাই কলাকান্দি ইউনিয়ন যুব দলের সভাপতি মো. ইমরান সরকার ও আপন মামা শ^শুড় উপজেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি মো. রবি হোসেন সরকার, বিএনপি নেতা আলম গীর হোসেন সরকার, কামরুল হাসানসহ উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আলম সরকারের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সামাজিক বিষয়টি বিবেচনা করেই মাঠে অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুর রহমান চৌধূরী বলেন, শুক্রবার অনুষ্ঠানের কথা ছিলো, গতকাল অনুষ্ঠান না হওয়ায় আজ অনুষ্ঠান হচ্ছে। রমজান মাসের ১৫দিন আমি স্কুল খোলা রেখেছি। সে কারনে আজ সংরক্ষিত ছুটি ঘোষনা করেছি। তবে পরিকল্পিত সংরক্ষিত ছুটি কি না জানতে চাইলে তিনি তা অস্বিকার করেন কিন্তু সূত্র জানায় দায় মুক্তির জন্য শনিবার সকালে সংরক্ষিত ছুটির জন্য আবেদন লিখেয়ে আনেন তবে স্কুল বন্ধ্যের বিষয়ে অন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা অভিভাবক কেউ জানেন না।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আনোয়ারা চৌধূরী বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি এবং প্রধান শিক্ষক বলেছে আজ নাকি সে সংরক্ষীত ছুটি দিয়েছে। তবে আজকে এ ছুটি ঘোষনা করা ঠিক হয়নি।
তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন এবিষয়ে কিছুই জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান।
Leave a Reply