(জাগো কুমিল্লা.কম)
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় শিউলি আক্তার (২৯) নামের দুই সন্তানের এক জননী বসত ঘরের বাশের তীরের সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগাইয়া আত্নহত্যা করেছে। ঘটনাটি উপজেলার সাহেবাবাদ ইউনিয়নের টাকই গ্রামে ঘটেছে। নিহত শিউলি আক্তার বুড়িচং উপজেলার পূর্ণমতি গ্রামের নোয়াপাড়া (মসজিদ গেইট) এলাকার মৃত রেনু মিয়ার মেয়ে এবং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার টাকই গ্রামের বড় বড়ীর ফিরোজ মিয়ার ছেলে আবু সাইদ মিয়ার স্ত্রী। বৈবাহিক জীবনে মেয়ে সামিয়া আক্তার (৮) এবং ছেলে শরিফুল ইসলাম (৫) নামের দই সন্তানের জননী শিউলি আক্তার।
এই ব্যাপারে নিহত শিউলি আক্তারের শ্বশুর ফিরোজ মিয়া, শ্বাশুরী রাবেয়া বেগম ও দাদী শ্বাশুরী আলেকা বেগম জানান, ঘটনার দিন ১৬ জুলাই সোমবার দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে ১২ টার দিকে দাদী শ্বাশুরী আলেকা বেগম দেখতে পায়, শিউলির বসত ঘরের আলো নেভানো এবং ঘরে ভিতর কিসের যেন শব্দ শুনা যাচ্ছে। তখন তিনি শিউলির বসত ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পায় শিউলি আক্তার ঘরের তিরের সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগাইয়া আত্নহত্যা করেছে। তখন তিনি তার কক্ষ থেকে ছেনা এনে শিউলির গলার ফাঁস কেটে দিয়ে শিউলিকে বিছানায় নামায় এবং চিৎকার করে। আলেকা বেগমের চিৎকার শুনে শিউলির শ্বশুর ফিরোজ মিয়া ও শ্বাশুরী রাবেয়া বেগম সহ বাড়ীর অন্যান্য লোকজন এগিয়ে আসে এবং স্থানীয় একজন ডাক্তাকে খবর দেয়। ডাক্তার এসে শিউলিকে মৃত ঘোষনা করে। কি কারণে শিউলি আত্নহত্যা করেছে তার কোন কারণ বলতে পারেননি তারা।
অপর দিকে শিউলির ভাই ফারুক আলম জানান, আমার বোন জামাই আবু সাইদ মিয়ার সাথে আমার বোনের প্রায় ১০ বছর পূর্বে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিবাহ হয়। তার পর থেকে আমার বোন শিউলি অক্তার স্বামীর সংসারে বেশ ভাল ভাবেই স্বামী, সন্তান, শ্বশুর শ্বাশুরী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে সংসার করে আসছে। আমার বোন জামাই অন্য ৮/১০ জনের চেয়ে একজন সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ এবং সে একজন দিন মুজুর। আমার বোন জামাই আবু সাইদ মিয়াকে তার দাদা মাঞ্জু মিয়া ৩৫ শতক জমি একক ভাবে দলিলের মাধ্যমে লিখে দেয়। বিষয়টি জানতে পেরে আমার বোনের দেবর প্রবাসী সাদ্দাম হোসেন বিভিন্ন সময়ে পরিবারে বিভিন্ন ভাবে অনিহা প্রকাশ করে। এই নিয়ে গত ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় আমার বোনের সাথে তার দেবর ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ঝগড়া হয়। এই নিয়ে ঘটনার দিন ১৬ জুলাই সোমবার আমার বোন আমাদের বাড়ীতে চলে আসে এবং একই দিন বিকেলে আমার বোন জামাই আমার বোনকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফোন করে তাদের বাড়ীতে চলে যেতে বলে। আমার বোন তার স্বামীর ফোনের পর সে তার শ্বশুর বাড়ীতে চলে যায়। ঘটনার দিন দিবাগত রাত আনুমানিক ১ টার সময় আমার বোন জামাইর প্রতিবেশি বাড়ীর এক লোক আমাদের ফোন করে আমার বোনের আত্নহত্যার বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে আমরা তৎক্ষণিক ভাবে ঐ বাড়ীতে ছুটে যাই এবং আমার বোনকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই এবং আমার বোনের আত্নহত্যার কারণ জানতে চাইলে তার শ্বশুর বাড়ীর লোকজন আমাদের কোন কারণ বলতে পারেনি।
খবর পেয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার এস আই বাবুল আহাম্মেদ সঙ্গীয় ফোর্স সহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহত শিউলি আক্তারের শোরত হাল রিপোর্ট তৈরী করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপালে প্রেরণ করে। এই ব্যাপারে তদন্তকারী অফিসার এস আই বাবুল আহাম্মেদ জানান, আমরা খবর পেয়ে নিহত শিউলি আক্তারের শ^শুর বাড়ীতে উপস্থিত হই এবং আমরা দেখতে পাই শিউলি আক্তারকে মৃত অবস্থায় বসত ঘরের খাটে রাখ হয়েছে। এ অবস্থায় আমরা স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে তার শোরত হাল রিপোর্ট তৈরী করে শিউলির লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপালে প্রেরণ করি। তিনি আরো জনান, শিউলি আক্তারের ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যার কারণ এখনো জানা যায়নি। শোরত হাল রিপোর্টে গলায় ফাঁসের দাগ ছারা শিউলির শরিরে কোথাও কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি এবং ময়না তদন্তের পর রিপোর্ট হাতে পেলে আত্নহত্যার কারণ জানা যাবে। এই সংবাদ লিখা পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
Leave a Reply