রবিউল হোসেন।।
কুমিল্লা জেলার মুরাদনগরে নহল গ্রাম থেকে অপহরণের ৭ ঘন্টার মধ্যে উপজেলার শুশুন্ডা থেকে একটি শিশুকে উদ্ধার করছে পুলিশ।
এই ঘটনায় শিশুটির দাদি, চাচাসহ ৪ জন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে মুরাদনগর থানা পুলিশ। অপহৃত শিশু তাফসির ইসলাম (৫) উপজেলার নহল গ্রামের প্রবাসী আক্তার হোসেনের ছেলে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লা পুলিশ সুপারের র্কাযালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদকিদরে সামনে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম । এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবদুল্লা আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেনসহ উধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়,মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭ টায় উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের শুশুন্ডা গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শিশুটির দাদি জোহরা বেগমসহ ৪ জন গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলার নহল গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে ও অপহৃত শিশু তাফসিরের বাবার চাচাতো ভাই কবির হোসেন (৩৩), দাদি জোহরা বেগম (৬০), রায়তলা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (২৬) ও নাগেরকান্দি গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়া (২২)।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, অপহৃত শিশুটির মা তানিয়া আক্তার (২৭) মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে সাংসারিক খরচের টাকা উত্তোলনের জন্য উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ সোনালী ব্যাংকে যাওয়ার পথে ছেলে তাফসিরকে চাচাতো দেবর কবির হোসেনের মোটর সাইকেলে বসে থাকতে দেখেন। ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে বাড়ি ফেরার পথে কবিরের স্ত্রী ফোন করে জানায় শিশু তাফসিরকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনার ৫ মিনিট পর অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন করে ৪ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। টাকা না দিলে শিশুটিকে খুন করে ফেলা হবে। পরে তানিয়া বেগম তার ছেলে অপহরণ ও মুক্তিপনের বিষটি নিকট আত্বীয় আশ্রাফ মেম্বারের মাধ্যমে বেলা ৩টায় মুরাদনগর থানা পুলিশকে জানায়।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মনজুর আলমের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নাহিদ আহম্মেদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপহৃত শিশু তাসফিরের চাচা কবিরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে অপহরনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তাসফির দাদি জোহরা বেগমের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় দেলোয়ার হোসেন, রাসেল মিয়া, নাসির, বাহাদুর, রুবেলের সহায়তায় শিশু তাফসিরকে মুক্তিপরের জন্য অপহরণ করা হয়। পরে জোহরা বেগমকে গ্রেফতার করে অন্য আসামীদের অবস্থান শনাক্ত করে মুক্তিপনের টাকা নিয়ে যাওয়ার কথা বললে অপহরণকারী রাসেল উপজেলার নাগেরকান্দি এলাকা থেকে মুক্তিপনের টাকা নিতে আসে।
এ সময় পুলিশ কৌশলে রাসেলকে গ্রেফতার করে রাসেলের মাধ্যমে অপহরণকারী দেলোয়ারকে জানায় মুক্তিপনের টাকা পাওয়া গেছে। তখন দেলোয়ার তানিয়া বেগমকে মুঠোফোনে বলে মুক্তিপনের টাকা পাওয়া গেছে তোর ছেলে শুশুন্ডা কবরস্থান মসজিদে আছে নিয়ে যা। পুলিশ অপহৃত শিশু তাফসিরকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে শুশুন্ডা কবরস্থান মসজিদ থেকে উদ্ধার করে অপহরণকারী দেলোয়ারকে রায়তলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। অপর আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার রাতে তাফসিরের মা তানিয়া বেগম বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় ৬ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লা পুলিশ সুপারের র্কাযালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদকিদরে সামনে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম।
Leave a Reply