( জাগো কুমিল্লা.কম)
হাসপাতাল কিংবা বাড়িতে নয়। রাস্তার পাশে, খোলা আকাশের নিচেই কিশোরী পাগলিটি জন্ম দিয়েছে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান। শনিবার বিকেলের দিকে ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার আমতলী এলাকায় মহাসড়কের পাশেই হঠাৎ পাগলির চিৎকারে পথচারীদের জটলা সৃষ্টি হয়। সন্তান সম্ভবা ওই কিশোরীর প্রসব বেদনায় কাতরানোর দৃশ্য দেখে স্থানীয় ৩-৪ জন নারী তার সন্তান প্রসব করাতে সক্ষম হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ মা ও তার নবজাতককে ভর্তি করেন পার্শ্ববর্তী ময়নামতি জেনারেল হাসপাতালে। মা ও কন্য সন্তান বর্তমানে সুস্থ আছেন। তবে সবার মনে একটায় প্রশ্ন কার পরিচয়ে বড় হবে কুমিল্লায় রাস্তায় পাশে জন্ম হওয়া পাগলির সন্তনটি ?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই কিশোরী দীর্ঘদিন যাবৎ ময়নামতি ও আমতলীসহ আশপাশের এলাকায় থাকত। স্থানীয়রা অনেকেই তাকে ‘পাগলি’ বলে ডাকতো। শনিবার বিকেলে জেলার আদর্শ সদর উপজেলার দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের আমতলী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লাগামী অংশে এ্যাপোলো ট্রেডার্স নামের একটি রড-সিমেন্টের দোকানের সামনে ওই কিশোরীর প্রসব বেদনা শুরু হয়। খবর পেয়ে স্থানীয় মিনুয়ারা, আনোয়ারা, কুলসুমসহ আরও কয়েকজন নারী এগিয়ে আসেন। পরে রাস্তার পাশেই নিরাপদে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করান।
খবর পেয়ে ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল, এসআই দয়াল হরি, এএসআই রাজু ও নুর আলমসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরে ওই পাগলি কিশোরী ও তার নবজাতককে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ময়নামতি সেনানিবাস এলাকায় ময়নামতি জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়।
স্থানীয় ২নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য খোরশেদ আলম কালু ও আমতলী এ্যাপোলো ট্রেডার্সের মালিক স্বপন জানান, মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে আমরা এগিয়ে এসেছি। আমাদের নষ্ট সমাজের এ পাপের জন্য তো শিশুটি দায়ী নয়, তাই মা ও নবজাতকের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা করছি।
এ বিষয়ে পুলিশ পরিদর্শক শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল জানান, ওই কিশোরী মানসিক ভারসাম্যহীন। সে তার নাম ঠিকানা ও পরিচয় বলতে পারে না।
তিনি বলেন, এই নবজাতক তো নিষ্পাপ। ওই কিশোরীর পক্ষে নবজাতককে লালন-পালন করা সম্ভব নয়। তাই কেউ শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে দত্তক দেয়ার বিষয়টি আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। বর্তমানে মা ও নবজাতক সুস্থ আছে। তাদের চিকিৎসার জন্য পুলিশ ও স্থানীয়রা প্রয়োজনীয় যা যা করা দরকার সবই করছে।
Leave a Reply