অনলাইন ডেস্ক:
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ঢাকা-চট্টগ্রাম ভায়া কুমিল্লা/ লাকসাম দ্রুতগতির রেলপথ নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং বিশদ ডিজাইন শীর্ষক একটি সমীক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এটি সম্পন্ন হলে প্রথমবারের মতো ঢাকা- চট্টগ্রামের মধ্যে দেশে দ্রুত গতির বুলেট ট্রেন চালু হবে। এটি সমাপ্ত হলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত মাত্র ৫৭ মিনিট এবং বিরতি দিয়ে ৬৯ মিনিটে যাওয়া সম্ভব হবে।’
জাতীয় সংসদে সোমবার মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন রেলমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘২০১৭ সালের ১৮ মার্চ সমীক্ষা প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। গত বছরের ৩১ মে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন হয়েছে। বর্তমানে সমীক্ষা চলমান। এছাড়া ঢাকা-খুলনা ও ঈশ্বরদী-রাজশাহী রুটে এবং জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ ও জয়দেবপুর-টাঙ্গাইলে এলিভেটেড রেলওয়ে নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।’
২০২৫ সালে রেল যাবে পায়রা বন্দরে
অপর এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, দেশের সব জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় বরিশাল জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার লক্ষ্যে ভাঙা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশদ নকশা প্রণয়নসহ সম্ভাবতা সমীক্ষা প্রস্তাব গত ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর পরিকল্পনামন্ত্রীর অনুমোদন পায়। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গত বছরের ১৯ জুন চুক্তি সই হয়। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে সমীক্ষা চলছে। প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৪০ শতাংশ। সম্ভাবতা সমীক্ষা শেষে প্রস্তাবিত এলাইনমেন্ট ও বিশদ নকশা অনুযায়ী বিনিয়োগ প্রকল্প গ্রহণ করে বরিশাল জেলাকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে এবং তা পায়রা বন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। ২০২৫ সাল নাগাদ ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে বরিশালের পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপিত হবে বলে জানান রেলমন্ত্রী।
আসছে ইলেকট্রিক ট্রেন
রেলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে মন্ত্রী জানান, দেশে বৈদ্যুতিক ট্রেন চালুর জন্য রেলওয়ের গ্রহিত মহাপরিকল্পনার আওতায় টঙ্গী-চট্টগ্রাম সেকশনে ইলেকট্রিক ট্রাকশন প্রবর্তনের জন্য সম্ভ্যাবতা সমীক্ষা, নারায়ণগঞ্জ- জয়দেবপুর, আখাউড়া- সিলেট, জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী-খুলনা এবং ঈশ্বরদী-পার্বতীপুর সেকশনে ইলেকট্রিক ট্রাকশন প্রবর্তনের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
দিদারুল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ১ লাখ আট হাজার ৬১৬ কোটি ব্যয়ে ৮১ টি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। যার মধ্যে ৬৪টি প্রকল্প শেষ হয়েছে। ২০১৮-১৯ সালে আরএডিপিতে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ৪৫টি বিনিয়োগ ও ৩টি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।’
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘রেলওয়েকে যুগোপযোগী গণপরিবহনে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে একটি মাস্টার প্লান তৈরি করা হয়েছে। ২০ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পটি ৪টি ফেজে ২০৩০ সালের জুন মাসে শেষ হবে। এ জন্য ২ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪৪ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৩৫টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা ছিল। এ মাস্টারপ্লানটি হালনাগাদ করা হয়েছে এবং গত বছরের ২৯ জানুয়ারি তা সরকার অনুমোদন দিয়েছে। নতুন অনুমোদিত এ মহাপরিকল্পনায় ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০৪৫ সালের জুন পর্যন্ত ৬টি ফেজে বাস্তবায়নের জন্য ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬২ কোটি ব্যয়ে মোট ২৩০টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
Leave a Reply