অনলাইন ডেস্ক:
কুমিল্লার ১১টি আসনে ৯৮ জন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির তিনজন নারী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে রয়েছেন বিএনপির প্রার্থী। সম্পদ বেশি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর। সম্পদ ও শিক্ষাগত যোগ্যতা—দুটিতেই পিছিয়ে রয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী।
মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থীদের জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ওই তিন নারী এবারই প্রথম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
ওই তিন প্রার্থী হলেন কুমিল্লা-২ (হোমনা ও তিতাস) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সেলিমা আহমাদ, কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা শাহিদা রফিক এবং একই আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী উত্তর জেলা মহিলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি নাজমা আক্তার।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ নভেম্বর কুমিল্লার ১১টি আসনে ১৩৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে বিভিন্ন অভিযোগে ৩৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। তিন নারী প্রার্থীর কারও মনোনয়নপত্র বাতিল হয়নি। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনে তাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
হলফনামা ঘেঁটে দেখা যায়, সেলিমা আহমাদের বছরে আয় ৯৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮০০ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর কাছে নগদ ১ লাখ ৬৭ হাজার ২৮২ ও ব্যাংকে ১৭ লাখ ২২ হাজার ৬৪৮ টাকা জমা আছে। তাঁর ৭ কোটি ৯২ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭০ টাকার বন্ড আছে। স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ আছে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার ৩১ টাকা। ২১ লাখ টাকার স্বর্ণও আছে সেলিমার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে হোমনার পাথালিয়াকান্দি এলাকায় তাঁর ১ কোটি ৩১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দামের ৩ দশমিক ১৮ বিঘা জমি আছে। গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় জমি, প্লট ও ফ্ল্যাট আছে তাঁর।
শাহিদা রফিকের বার্ষিক আয় ৭ লাখ ৬৩ হাজার ২৭১ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর নগদ টাকা, ব্যাংকে জমা ও আমানত বাবদ ১ কোটি ২৪ লাখ ৩২ হাজার ৩২০ টাকা রয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।
নাজমা আক্তারের বছরে আয় ৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। তাঁর অস্থাবর সম্পদ আড়াই লাখ টাকা। স্থাবর সম্পদ নেই।
সেলিমা আহমাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। শাহিদা রফিকের শিক্ষাগত যোগ্যতা ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি)। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। নাজমা আক্তারের শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক। তিনি পেশায় গৃহিণী।
স্থানীয় বাসিন্দা ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, সেলিমা আহমাদ নিটল–নিলয় শিল্পগোষ্ঠীর চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদের স্ত্রী। তিনি উইমেন চেম্বারের সভাপতি। এক বছর আগে থেকে তিনি বাবার বাড়ি হোমনা উপজেলার পাথালিয়াকান্দি গ্রাম থেকে নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করেন। এরপর তিনি উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হন।
হোমনার ২০ বছরের আওয়ামী লীগের কান্ডারি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবদুল মজিদকে বাদ দিয়ে দল এবার তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে।
জানতে চাইলে সেলিমা আহমাদ বলেন, ‘সরাসরি নির্বাচন করে জেতাই আমার লক্ষ্য। এই জনপদ অবহেলিত। এখানে আমি শিল্পপ্রতিষ্ঠান করতে চাই। নারী-পুরুষের মধ্যে সমতা আনতে চাই।’
শাহিদা রফিক ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় রাজনীতি করেন। তাঁর স্বামী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া এ আসনে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। রফিকুল দুদকের করা একটি মামলায় সম্প্রতি সাজা পেয়েছেন। এবার এ আসনে শাহিদা নির্বাচন করছেন। তিনি এ আসনে বিএনপির একক প্রার্থী। তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি এমনিতেই জিতবে। মুরাদনগরের সঙ্গে আমার নিবিড় সম্পর্ক, এটি আমার এলাকা, ঘর।’
নাজমা আক্তার মুরাদনগর উপজেলা জাতীয় পার্টির সদস্য মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী। নাজমা দীর্ঘদিন থেকে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, ‘দল মনোনয়ন দিয়েছে। নির্বাচন করব। নারী ভোটারদের পাশাপাশি পুরুষ ভোটাররাও আমাকে রায় দেবেন।’
Leave a Reply