অনলাইন ডেস্ক:
কুমিল্লা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ইপিজেড) ইটাসিয়া ইন্টারলাইনিংস লিমিটেড একটি কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকাল ৭ টা ৫৫ মিনিটে প্রতিষ্ঠানটির ৪র্থ তলার ওয়ার হাউজে আগুন লাগে। এ ঘটনায় হতাহতের কোন ঘটনা না ঘটলেও রহস্যের মায়াজালে বন্দি অগ্নিকান্ডের প্রকৃত কারণ।
কারখানার ৪র্থ তলার কোন প্রকার বৈদুৎতিক লাইন নেই, সেখানে কারখানার গোডাউন । মূলত শার্ট ও প্যান্টের বকলম হিসেবে ব্যবহার হয় এসব মালামাল। অগ্নিকান্ডের ঝুঁকি এড়ানোর জন্য কোন বৈদুত্যিক লাইন দেওয়া হয়নি। নেই কোন আগুন লাগার মতো উপাদান। তাহলে কিভাবে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই জন্য বিভিন্ন মহলে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। সন্দেহ আরও বেড়েছে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার বিষয়টি।
কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৈয়ব আলী অগ্নিকান্ডের ঘটনায় অবাক হয়েছেন। ইপিজেডের জিএমও বিষয়টি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। অগ্নিকান্ডের পেছনে কি অন্য কোন কারণ রয়েছে ? তবে তা জানার তদন্ত কমিটি রিপোর্টই শেষ ভরসা ।
অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ইপিজেডের দুইটি ইউনিটসহ ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট দুই ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুণের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানা যায়নি। ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি আগামী তিন দিনের মধ্যে চুড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করবে।
দুপুর সাড়ে ১২ টায় আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রেস ব্রিফিং করেন কুমিল্লা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মো: আহসান কবীর। তিনি জানান, সাপ্তাহের প্রথম দিন সকল কর্মকর্তা -কর্মচারী যারা কাজের জন্য কারখানার গেইটে প্রবেশের অপেক্ষায় ছিল গতদিন শুক্রবার হওয়ায় ভেতরে কোন লোকবল ছিল না। যা কারণে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটে নি।
তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ৪র্থ তলায় মালমাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বাকি অন্যান্য ফ্লোর অক্ষত রয়েছে। কারণ অনুসন্ধান, ক্ষয়ক্ষতির নিরুপণ ও ভষিষ্যৎ করণীর সক্রান্ত দিক নির্দেশনার জন্য কমিটি গঠন করা হবে। এ রকম একটি দুর্যোগপূর্ণ সময়ে পাশে থাকার জন্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র্যাব, সেনাবাহিনী, ডিবি, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার বাহিনীর উর্ধ্বতন কমকর্তাবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক সহ স্থানীয় গন্যমান্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
ইটাসিয়া ইন্টারলাইনিংস লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৈয়ব আলী বলেন, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ৪র্থ তলায় ইলেকট্রিকের কোন লাইন নেই। আমরা অবাক হয়ে যাচ্ছি ওখানে কিভাবে আগুন সূত্রপাত হলো। সঠিক কারণটি এখনও বের করতে পারিনি। তাই তদন্ত রিপোর্ট পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
কুমিল্লা জেলা ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক প্রান্ত নাথ সাহা বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে কারখানার ভিতরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। অগ্নিকান্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি পরিমান এখনও জানা যায়নি।
এদিকে ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিক প্রবেশ বাধা দেয় ইপিজেড কর্তৃপক্ষ । এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কুমিল্লার সাংবাদিকরা। ঘন্টার পর ঘন্টা গেইটে অপেক্ষ করেন তারা।
দৈনিক কুমিল্লার কাগজের সম্পাদক ও চ্যানেল আইয়ের কুমিল্লা প্রতিনিধি আবুল কাশেম হৃদয় জানান, কুমিল্লার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে না দেওয়াতে জনগণ ইপিজেডে কি ঘটনা ঘটেছে তা জানতে পারছে না। যে কোন ঘটনায় ইপিজেড কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের সাথে খারাপ আচরণ করে। এটার সমাধান হওয়া উচিত।পরবর্তীতে দুপুরে কুমিল্লা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মো: আহসান কবীর বিষয়টি নিয়ে দু:খ প্রকাশ করে নিজের সীমাবদ্ধতার কথা জানান। প্রেস ব্রিফ শেষে সাংবাদিকদের ঘটনাস্থলে নিয়ে যান তিনি।
উল্লেখ্য এই বছরের ৮ এপ্রিল ইপিজেডের আর এন স্পিনিং মিলস লিমিটেডে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে । তখন ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট রাতভর চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কয়েক হাজার কোটি টাকা ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছিল।
Leave a Reply