অনলাইন ডেস্ক:
প্রাপ্ত বয়স হলে নিজের ছেলেকে বিয়ে করাবেন এমন কথাই এলাকায় চাউর ছিল। অথচ সবাইকে হতবাক করে দিয়ে ছেলের হবু স্ত্রী ১৩ বছরের কিশোরী কে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে নিজেই বিয়ে করলেন ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার লালমাইয়ের পেরুলে। এনিয়ে স্যোসাল মিডিয়ায় চলছে প্রতিবাদের ঝড়। লক ডাউন ভেঙ্গে ১০ মে কুমিল্লায় নগরীদে এসে বিয়ে করলেন তারা ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম পেরুল গ্রামের ইমান হোসেন ঢাকায় চাকরি করায় গ্রামে বসবাস করা তার পরিবারের দেখাশুনা করতেন পেরুল দীঘিরপাড়ার রিক্সা চালক সামছল হক। ইমান আলীর ২য় কন্যা মরিয়ম আক্তার (১৩) স্থানীয় পেরুল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সামছল হক নিজের রিক্সায় তাকে নিয়মিত স্কুলে আনা নেওয়া করতেন। কাজের কারনে মাঝে মধ্যে তিনি ওই বাড়ীতে রাত্রীযাপনও করতেন । এনিয়ে স্থানীয়রা আপত্তি করলে তিনি প্রাপ্ত বয়স হলে মরিয়মের সাথে নিজের ছেলে মনিরের বিয়ে হওয়ার কথা এলাকায় প্রচার করেন।
কিন্তু গত ১০ মে রবিবার সামছল হক সবাইকে হতবাক করে ৫২ বছরের ছোট মরিয়মকে নিয়ে উধাও হয়ে যান। এনিয়ে স্থানীয়দের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে ১১ মে সোমবার পেরুল দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান লোকমারফত সামছল হক ও মরিয়মকে ইউপি কার্যালয়ে হাজির করে বিস্তারিত জানতে চান। ওই সময় সামছল হক মরিয়মের প্রাথমিক শিক্ষা সনদ, জন্মনিবন্ধন সনদ ও বিয়ের কাবিননামা উপস্থাপন করেন। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার সনদ ও জন্মনিবন্ধনে মরিয়মের জন্মতারিখ উল্লেখ রয়েছে ০২/০২/২০০২ইং। ২০০৮ সালে জন্মনিবন্ধনের সময় পরিবারের পক্ষে মরিয়মের বয়স বাড়িয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সামছল হকের বিরুদ্ধে। কাবিননামায় দেখা যায়, গত ১০ মে কুমিল্লা সিটি কর্পোশেনের ৭নং ওয়ার্ড এর নিকাহ রেজিষ্ট্রার মুজিবুর রহমান সরকারের কার্যালয়ে ৫লক্ষ টাকা মোহরানায় বই নং ৫৪, পৃষ্ঠা নং ২৮ ও ক্রমিক নং ৪৪০-এ তাদের বিয়ে রেজিষ্ট্রি হয়। কাবিনামায় সামছল হকের জন্মতারিখ ০৩/০১/১৯৫৫ইং উল্লেখ রয়েছে।
এদিকে সামছল হকের পক্ষে এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী অবস্থান নেওয়ায় তার প্রথম স্ত্রী, সন্তান, আত্মীয়স্বজন ও মরিয়মের পরিবারের সদস্যরা মুখ খুলছে
পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ডালিম বলেন, জন্মসনদে বয়স বাড়িয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ ১৩ বছরের কিশোরীকে পালিয়ে বিয়ে করেছেন। এটা শিশু নির্যাতনের অপরাধ। মেয়েটির জীবন রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি।
পেরুল দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান এজিএম শফিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে আমি উভয়কে আমার অফিসে ডাকি। বর ৬৫ বছরের বৃদ্ধ। কনের ১৮ বছর হয়নি। তবে তাদের উপস্থাপিত জন্মনিবন্ধন ও শিক্ষা সনদ অনুযায়ী কনে প্রাপ্ত বয়ষ্ক। কনেকে বারবার অনুরোধ করলেও সে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে রাজি হয়নি। সূত্র: মানবজমিন
Leave a Reply