নিজস্ব প্রতিবেদক:
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নৌকা ডুবির ঘটনায় নিহত পুলিশ সদস্য সোহেল রানা তার স্ত্রী মৌসুমি আক্তার, মেয়ে সুলতানা ইভা ও ছেলে রাইসুল ইসলামকে পাশাপাশি সমাহিত করা হয়েছে।
সোমবার সকালে সোহেল ও তার ছেলে রাইসুলের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এর আগে শনিবার স্ত্রী মৌসুমি আক্তার ও রোববার মেয়ে মাহমুদার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় ভৈরবে মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় তারা সকলে নিখোঁজ হয়ে মারা যান।দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ গ্রামে পাশাপাশি চারটি কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে মা-বাবা আর তাদের দুই সন্তানকে।
দুর্ঘটনার কয়েকদিন আগে ভাগনি মারিয়াকে বাড়ি থেকে ভৈরব বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিল সোহেল। মারিয়া এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। অবসর সময়টা কাটাতে মামার সঙ্গে আনন্দ চিত্তে বেড়াতে যেতে রাজি হয়েছিল মারিয়া। সেই আনন্দগুলো আজ বিষাদে পরিণত হয়েছে।
শুক্রবার বিকালে সোহেল তার স্ত্রী, দুই সন্তান ও ভাগনি মারিয়াকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের সোনারচর দ্বীপ গ্রাম দেখতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে নৌকায় থাকা কয়েকজন ছবি তোলার জন্য মাঝিকে অনুরোধ করলে মাঝি তার হাতের বৈঠা ছেড়ে ছবি তুলে দিচ্ছিলেন। এ সময় নৌকাটি কিছুটা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। তখন বিপরীত দিক থেকে আসা বালুবাহী একটি বাল্কহেড ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে নৌকা উল্টে যায়। এ সময় মারিয়া প্রাণে বেঁচে গেলেও অপর চারজন পানিতে তলিয়ে যায়। অনুসন্ধানে নামে ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশের ডুবুরি দল।
সোহেল রানা কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে। তিনি ২০১১ সালে পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন।
ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজু মিয়া বলেন, সোহেল রানা আমাদের সহকর্মী ছিলেন। এভাবেই পুরো পরিবারটি দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার খবরে আমরা মর্মাহত। তার পরিবারের সবার মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। স্ত্রী মৌসুমি আক্তারের মরদেহ উদ্ধারের পর শনিবার রাতে দেবিদ্বারে গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। সোমবার বাদ জোহর ভৈরব হাইওয়ে থানার সামনে সোহেল ও তার দুই সন্তানের জানাজা শেষে মরদেহ দাফনের জন্য স্বজনরা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান।
সোহেলের ভগ্নিপতি ফেনীর মহিপাল হাইওয়ে পুলিশের এএসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, তিনজনের মরদেহ সোমবার বাদ মাগরিব জানাজা শেষে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়েছে। এ সময় দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নয়ন মিয়া, ৬নং ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান মাসুদসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply