অনলাইন ডেস্ক:
কোয়ালিফায়ার-১’এ খেলতে পারার সুবিধা একটাই। বিজয়ী দল জিতেই সোজা চলে যায় ফাইনালে। তবে পরাজিত দলের সব শেষ হয়ে যায় না। তাদের আরও একটি সুযোগ থাকে। আজ রাতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে ৮ উইকেটে হারের পর মাশরাফির রংপুর রাইডার্সের অবস্থাও ঠিক তাই।
ইমরুল কায়েস, তামিম ইকবাল, এভিন লুইস, এনামুল বিজয়, শামসুর শুভদের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স চলে গেল ফাইনালে। তাই বলে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের এবারের বিপিএল শেষ হয়ে যায়নি। মাশরাফি বাহিনীর সামনে ফাইনাল খেলার আছে আরও একটি সুযোগ।
ঢাকা ডায়নামাইটস আর চিটাগাং ভাইকিংসের মধ্যকার এলিমিনেটর ম্যাচের বিজয়ী সাকিব বাহিনীর সাথে এখন প্লে-অফ পর্বে খেলা বাকি মাশরাফি বাহিনীর। আগামী পরশু বুধবার ওই লড়াই। যার বিজয়ী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সাথে ৮ ফেব্রুয়ারির ফাইনাল খেলবে।
তাই সোমবার রাতের বিজয়ী কুমিল্লা শিবিরে আনন্দ, উচ্ছাস-উল্লাস। কিন্তু রংপুর শিবির তাই বলে নিস্তব্ধ হয়নি। তারা সবাই পরশুর ম্যাচের দিকে তাকিয়ে। তবে আজকের ম্যাচের পোস্টমর্টেমও চলছে। ম্যাচ শেষে প্রেস কনফারেন্সে কথা বলতে এসে রংপুর অধিনায়ক মাশরাফির কণ্ঠেও শুরুতে সেই কথা, ‘আমাদের তো সব শেষ হয়ে যায়নি। আরও একটি ম্যাচ আছে। সেটা যেন আবারও এক সেমিফাইনাল।’
হারের কারণ খুঁজতে গিয়ে মাশরাফির প্রথম ও প্রধান উপলব্ধি, রাতের ম্যাচে শিশির ভেজা উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য আরও সহজ হয়ে যায়। যে কারণে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রান বেশি ওঠে। সে আলোকে রংপুর অধিনায়ক মনে করেন, তার দলের রানটা কম হয়ে গেছে। মাশরাফির ভাষায়, ‘১৫ থেকে ২০ রান কম হয়ে গেছে।’
শেষ দিকে বেনি হাওয়েল আর রিলে রুশো ৫ ওভারে ৭৪ রান তুলেছেন। তারপরও রান কম? মাশরাফির কাছে আছে তারও সাজানো গোছানো ব্যাখ্যা, ‘আসলে আমরা পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে অন্তত ১০ থেকে ১৫ রান কম করে ফেলেছি। পাওয়ার প্লে’তে আমাদের রান মোটে ৩৪।’
মাশরাফির ব্যাখ্যা, ওই রানটা আরও বেশি হতে পার তো। কেন হয়নি? কারণ খুঁজতে গিয়ে তার মনে হয়েছে শুরুর দিকে হাত খুলে খেলে রানের চাকা দ্রুত এবং স্কোরলাইন বড় করার তাড়াটাই কম ছিল। সে কথা বলতেও ভুল হয়নি, ‘দেখেন আমরা পাওয়ার প্লে’র পুরো ৬ ওভারের শেষ বলে গিয়ে উইকেট হারিয়েছি। কিন্তু রান উঠেছে মাত্র ৩৪।’
ভাবটা এমন, যদি আরও আগে এবং বেশি উইকেট পড়তো তাহলে না হয় মানা যেত। রংপুর অধিনায়ক জানিয়ে দিলেন, ‘কোয়ালিফায়ার-২’তে শুরু থেকে রানের গতি বাড়ানোর ও হাত খুলে খেলার তাগিদ বেশি থাকতে হবে। তার দরকারও আছে।’
বাঁহাতি ক্রিস গেইলের ট্র্যাক রেকর্ড জানাচ্ছে, অফস্পিনাররা তার বিপক্ষে তুলনামূলক সফল। আগেরবারও এই কুমিল্লার বিপক্ষে তিনবারের মোকাবিলায় দুবার অফস্পিনার মেহেদি হাসানের বলে আউট হয়েছিলেন গেইল। আজ তাকে শুরুতে শান্ত রাখতে, তার ব্যাটের উত্তাল রূপ দমাতে কুমিল্লা টিম ম্যানেজমেন্ট মেহেদি হাসানের সাথে আরেক অফস্পিনার সঞ্জিত সাহাকে খেলিয়েছেন এবং মেহেদি একপ্রান্তে বোলিং শুরুর পর পাওয়ার প্লে’তে আরেক অফস্পিনার সঞ্জিত সাহাও বোলিংয়ে এসেছেন। দু’দিকে দুই অফস্পিনার বোলিংয়ে থাকায় হয়ত গেইল একটু রয়ে সয়ে খেলেছেন। সে কারণেই কি পাওয়ার প্লে’তে কম রান উঠেছে?
প্রশ্ন করা হলে মাশরাফি বলেন, ‘ম্যাচে কোনো দলের বিশেষ লক্ষ্য-পরিকল্পনা ও স্ট্রাটেজি যদি সফল হয়, তখন বলতেই হয় সেটা গুড মুভ। যেহেতু তাদের লক্ষ্য সফল হয়েছে, বলতেই হবে সেটা ছিল বুদ্ধিদীপ্ত ও কার্যকর সিদ্ধান্ত।’
অ্যালেক্স হেলস আর এবি ডি ভিলিয়ার্স চলে গেছেন। দুজন ইনফর্ম টপঅর্ডার যারা প্রায় নিয়মিত ভালো খেলেছেন, রানও করেছেন তাদের ছাড়া খেলতে নেমে পরে ব্যাট না করে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা কেন? এমন প্রশ্ন উঠলে মাশরাফির জবাব, ‘আসলে হেলস আর এবি ডি ভিলিয়ার্স চলে যাওয়ায় ব্যাটিং গভীরতা কমে গেছে খানিকটা। তাই আমার মনে হয়েছে, ক্ষয়িষ্ণু ব্যাটিং নিয়ে রান তাড়ার চেয়ে আগে ব্যাট করা শ্রেয়। তাই আগে ব্যাটিংয়ে নামা।’
এদিকে টুর্নামেন্টের সবগুলো ম্যাচ খেলেও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি ক্রিস গেইল। তবে এনিয়ে চিন্তিত নন মাশরাফি। গেইলের ব্যাটে রানখরার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এখনো তো সুযোগ আছে। গেইলের ভালো খেলার মতো সময়ও আছে। তার মতো খেলোয়াড়দের কাছ থেকে বড় কিছুর আশাই করি আমরা। সেটা হয়তো সামনেই ম্যাচেই দেখা যাবে। আমরা এখনই শেষ বলে দিতে পারি না।
Leave a Reply