আকিবুল ইসলাম হারেছঃ
কুমিল্লায় প্রথম করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আ ক্রান্ত হয়ে রোগীর মৃ ত্যুর ঘটনার পর থেকে মারাত্মক ঝুঁকিকে রয়েছে চান্দিনা উপজেলা।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়া জীবন কৃষ্ণ সাহার বাড়ি দেবীদ্বার উপজেলায় হলেও বাড়িটি চান্দিনা উপজেলা সদরের নিকটবর্তী হওয়ায় চিকিৎসা নেয় চান্দিনা। তিনি এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়া, একটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা, ফার্মেসী থেকে ওষুধ কেনা সব কিছুই করেন চান্দিনা বাজারে।
বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ওই রোগীর নমুনা সংগ্রহ করার পর শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃ ত্যু ঘটে। শনিবার (১১ এপ্রিল) নমুনা পরীক্ষায় ওই রোগীর শরীরে করোনা শনাক্ত হওয়ার দেবীদ্বার উপজেলার নবীয়াবাদ গ্রামের ৫টি বাড়ি লকডাউন করে প্রশাসন।
অপরদিকে, গত ৩ তারিখের পর থেকে করোনা আ ক্রান্ত ওই রোগী চান্দিনায় যে পল্লী চিকিৎসকের ফার্মেসীতে চিকিৎসা নেন ওই ‘জিএম সেন ফার্মেসী’ বন্ধসহ পল্লী চিকিৎসক অসিত কুমার সেনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পরাশর্ম দেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। এছাড়া ওই রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কারণে দত্ত ডায়গনষ্টিক সেন্টার সহ দত্ত মেডিকেল হলকে বন্ধ করেন চান্দিনা উপজেলা প্রশাসন।
এদিকে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তে মৃ ত্যু হওয়া জীবন কৃষ্ণ সাহার সংস্পর্শে প্রাণঘাতি ওই করোনা ভাইরাস যদি পল্লী চিকিৎসক অসিত সেন ও দত্ত ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের মাধ্যমে চান্দিনায় ছড়িয়ে যায় তাহলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চান্দিনায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে অনেক। এতে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে চান্দিনা উপজেলা সহ দক্ষিণ দেবীদ্বারের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বাসিন্দা।
চান্দিনা বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন- করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃ ত্যু হওয়া জীবন কৃষ্ণ সাহার বাড়ি দেবীদ্বার উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরবর্তী, কিন্তু চান্দিনা উপজেলা সদরের মাত্র দে ড় কিলোমিটার মধ্যে।
আর জীবন কৃষ্ণ সাহা নিজেই চান্দিনায় ঘুরে বেরিয়েছেন। এছাড়া নবীয়াবাদ গ্রামের অধিকাংশরাই চান্দিনাতে ব্যবসা করেন এবং চান্দিনা বাজারই তাদের একমাত্র ভরসা। কে, কিভাবে ভাইরাস ছড়িয়েছে তা বলার কোন উপায় নেই। এতে আমরা মারাত্মক ঝুঁ কিতে আছি।
এব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আহসানুল হক জানান- রোগীর বাড়ি দেবীদ্বার হলেও সে চিকিৎসা নেয় চান্দিনা বাজারের এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে। তার পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা হয় চান্দিনায়। শনিবার করোনা ভাইরাস পজেটিভ আসার পর আমাদের কাছে তথ্য আসলে আমরা ওই প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন- যদি করোনা ভাইরাসে আ ক্রান্ত হওয়া ওই রোগীর মাধ্যমে চান্দিনায় ছড়িয়ে পড়ে তাহলে এক সপ্তাহের ব্যবধানে চান্দিনা ও তার আশ-পাশের এলাকাগুলোতে আ ক্রান্ত হতে পারে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা প্রথমে চিকিৎসককেই হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছি।
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্নেহাশীষ দাশ জানান- যেহেতু জেলাকে লকডাউন করা হয়েছে সেখানে মানুষের অবাধ বিচরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা বাজারের মাইকিং সহ সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখা এবং অকারণে বাজারে আসতে বারবার নিষেধ করে আসছি।
Leave a Reply