( জাগো কুমিল্লা.কম)
কুমিল্লার দেবিদ্বারে ও সদর দক্ষিণে এক ঘন্টার ব্যবধানে বন্দুক যুদ্ধে শীর্ষ দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। এই নিয়ে কুমিল্লা ৭ দিনে শীর্ষ ১০ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। সোমবার রাত ১ টা ও ২ টায় পৃথক বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়।
দেবিদ্বারে বন্দুক যুদ্ধে দোলন নিহত:
কুমিল্লার দেবিদ্বারে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান চলাকালে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এনামুল হক দোলন (৩৫) নামে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। সে ভিংলাবাড়ী মির্জানগর এলাকার মৃত আব্দুল্লাহ ভূইয়া ছেলে। অাত্মরক্ষার্থে জান-মালের নিরাপত্তায় ২৩ রাউন্ড শর্ট গানের গুলি বর্ষণ করে পুলিশ। এ সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়।
সোমবার রাত ১ টায় ভিঙ্গলাবাড়ি গোমতী নদীর তীরে পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়।
তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১২ টি মামলা রয়েছে। এ সময় পুলিশ ১০ কেজি গাঁজা, ১০০ পিস ইয়াবা, ১টি পাইপগান, ১ রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও ১টি কার্তুজের খোসা উদ্ধার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে অবৈধ অস্ত্র-গুলি ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার অভিযানে গেলে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে অবৈধ অস্ত্রধারী মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি বর্ষণ ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশও অাত্মরক্ষার্থে নিজস্ব জান-মালের নিরাপত্তায় পাল্টা গুলি বর্ষণ করে।
অন্যান্য অজ্ঞাতনামা অবৈধ অস্ত্রধারী মাদক ব্যবসায়ীদের এলেপাথাড়ি গুলিতে তাদের মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হলে তাকে দ্রুত কুমিল্লায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। দায়িত্বরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
সদর দক্ষিণে নিহত নুরু মিয়া:
কুমিল্লা সদর দক্ষিণে পুলিশ ও মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে বন্দুক যুদ্ধে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নুরু (৫৫) নিহত হয়েছে। সে উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে একটি অস্ত্র ও ১০টি মাদক মামলা । সোমবার রাত ২ টায় উপজেলা গলিয়ারা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী পুলিশ সুপার (সদর দক্ষিণ- বরুড়া সার্কেল) গোলাম আম্বিয়া মাহমুদ। এই নিয়ে গত সাত দিনে কুমিল্লায় ১০ জন মাদক ব্যবসায়ী বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মাদকের চালান যাচ্ছে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ খবর পেয়ে সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের টিম গলিয়ারা-লক্ষ্নীপুর গ্রামের সীমান্তে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশের উপর হামলা করে মাদক ব্যবসায়ীরা। পুলিশ আত্মরক্ষায় গুলিবর্ষণ করলে নুরু গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হয়।
দিকে কুমিল্লায় মাদক বিরোধী অভিযানে ২২ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ১০ জন তালিকভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। মাদক পাচারের অন্যতম রুট ভারতীয় সামান্তবর্তী উপজেলার আদর্শ সদর , সদর দক্ষিণ, চৌদ্দগ্রাম , বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়ায় পুলিশ – মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে পৃথক বন্দুক যুদ্ধে তারা নিহত হয়।
অভিযানে যারা নিহত হয়েছেন
২২ মে মঙ্গলবার রাত একটায় আদর্শ সদরের বিবির বাজার এলাকায় শরীফ নামের (২৬) পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। সে সদর দক্ষিণ উপজেলার মহেশপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ৫ টি মাদক মামলা রয়েছে।
পৃথক অভিযানে একই স্থানে পিয়ার আলী (২৮) বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। সে আদর্শ সদর উপজেলার শুভপুর গ্রামের আলী মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১৩ টি মামলা ছিল।
২৩ শে মে বুধবার রাত সাড়ে ১২ টায় আদর্শ সদর উপজেলার চাঁনপুর ব্রীজ এলাকায় ইসহাক ওরোফে ইসা (৩৫) ) পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। সে আদর্শ সদর উপজেলার আব্দুল জলিলে ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১১ টি মামলা রয়েছে।
২৪ মে বৃহস্পতিবার রাত একটায় চৌদ্দগ্রামের আমানগন্ডায় এলাকায় পুলিশের বন্দুক যুদ্ধে বাবুল, ওরোফে লম্বা বাবুল নিহত হয়। সে চৌদ্দগ্রামের বৈদ্দের খিল গ্রামের আমান মিয়ার ছেলে।তার বিরুদ্ধে ৫ টি মামলা ছিল।
একই সময় সদর দক্ষিণ উপজেলার গোয়ালমথন এলাকায় রাজিব (২৬) পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। সে সদর দক্ষিণ চাঙ্গিনি গ্রামের মৃত শাহ আলম মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১৩ টি মামলা ছিল।
২৫ মে শুক্রবার রাত ১২ টায় বুড়িচং উপজেলার মহিষপাড়া এলাকায় কামাল হোসেন, ওরোফে ফেন্সি কামাল (৫১) পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। সে আদর্শ সদর উপজেলার রাজমঙ্গল গ্রামের হিরণ মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১২টিরও বেশি মামলা ছিল।
২৬ মে শনিবার রাত দেড়টায় ব্রাহ্মণপাড়ার বাগড়া এলাকায় বাবুল (৪০) পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। সে ব্রাহ্মণপাড়া আশাবাড়ি গ্রামের আব্দুল মালেকে ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১৬ টি মামলা রয়েছে।
২৮ শে মে কুমিল্লার দেবিদ্বারে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান চলাকালে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এনামুল হক দোলন (৩৫) নামে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। সে ভিংলাবাড়ী মির্জানগর এলাকার মৃত আব্দুল্লাহ ভূইয়া ছেলে। অাত্মরক্ষার্থে জান-মালের নিরাপত্তায় ২৩ রাউন্ড শর্ট গানের গুলি বর্ষণ করে পুলিশ। এ সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়। তার বিরুদ্ধে ১২ টি মামলা রয়েছে।
একই সময় আলমাস(৩৬) নামে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। সে ব্রাহ্মণপাড়া এলাকায় দক্ষিণ তেতা ভূমি গ্রামের আফাজ উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ৮ টি মামলা রয়েছে।
এছাড়া পুলিশের বিশেষ অভিযানে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় নারী সহ কয়েক শতাধিক মাদক সেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা হয়েছে
Leave a Reply