অনলাইন ডেস্ক:
দেখার মতো তেমন কোন প্রাণী নেই। বেশী সংখ্যাক খাঁচাই খালী। নেই বৃহৎ পাখা বিশিষ্ট ময়ূর, নেই বনের রাজা, নেই সেই সিংহের হুংকার গর্জন। বলছি কুমিল্লা চিরিয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের কথা। জেলা পরিষদ নিন্মমান সহকারী কিশোর কুমার দেবনাথের দেওয়া তথ্যমতে এখানে ৮ শ্রেণির প্রাণি আছে। বর্তমান অবস্থা দেখে নাঙ্গলকোট থেকে আসা সাফায়েতুল্লাহ মিয়াজী নামে এজকন দর্শনার্থী ইহার নাম দিয়েছেন মুরগীর খামার। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, ২০ টাকা টিকেট না, যদি ফ্রিতেও কেউ এখানে প্রবেশ করে, তারপর ও গাড়ি ভাড়া, সময় নষ্ট হবে। প্রবেশদ্বারের বামে কিছু ঘাস, গাছগুলো মরে গেছে, দেয়াল ভেঙ্গেছে বহু আগে। নেই কোন ফুলের গাছ বা বিশেষ কোন ঘাস/গাছ। তারপার ও এটার নাম বোটানিক্যাল গার্ডেন ? দুই যুগ আগে ১০ একর জমির উপর নির্মিত বৃহত্তর কুমিল্লার একমাত্র চিরিয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেনটি হারিয়েছে তার ঐতিহ্য। এখন আর আগের মতো দর্শনার্থী নেই, দৈনিক ২০-২২ জোড়া তরুণ তরুণী প্রবেশ করে। নেই পাখি, নেই প্রাণি, বোটানিক্যাল গার্ডেন প্রমাণ করার মতো কী আছে এখানে? তারপরও কেন ১৪-৩০ বছরের তরুণ-তরুণীরা? কেউ আবার স্কুল-কলেজ ফাঁকি দিয়ে ড্রেস পড়েই প্রবেশ করে এখানে।
সরে জমিনে দেখা যায়, প্রচন্ড রোদ বা বৃষ্টি কোনটাই নেই, তবে ছাতার নিচে নিজেদের আড়াল করে বসে আসে জোড়া কিশোর কিশোরী। কারো আবার কারো আবার ছাতারও প্রয়োজন হয় না, দিন দুপুরে নির্ভয়ে জরিয়ে ধরে আছে একে অন্যকে। বোটানিক্যাল গার্ডেনের পুকুরের আসপাস, গাছের চিপা চাপা, আর ব্যাঞ্চি কোথায় বাকী নেই নোংরামি, আর অশ্লিলতার। কেন এমনটা করছেন আপনারা? এমন প্রশ্নে একজন বলেন আমরা একে অন্যকে বিয়ে করেছি। বিয়ে করলে এমন দৃশ্য চিরিয়াখানায় কেন? কোন উত্তর দিতে পারেনি তারা।
এমন অশ্লিলতা আর নোংরমিকে দিনের পার দিন পশ্রয় দিয়ে আসছে ইজারাদার ও তাদের কথিত দালালরা। অভিযোগ রয়েছে, জোড়া তরুণ-তরুণীরা যখন নোংরামির সবোর্চ্চ সীমার উপনীত হয়, তখন দালালরা তাদের নিকট নির্ধারিত অংকে টাকা দাবি করে, টাকা না দিলে মোবাইল কেরে নেয় দালালচক্র। আর বাড়াবাড়ি করলে মা-বাবাকে খবর দেওয়া হবে, পুলিশে দেওয়া হবে ইত্যাদি হুমকি দেওয়া হয়।
বিনোদন কেন্দ্রের এমন চিত্র কেন? সাংবাদিক পরিচয় দিতে ক্ষেপে যান সজিব নামের একজন, খবরদেন স্থানীয় বখাটেদের। সে সাংবাদিকতার সতত্যা ঝাচাই করার জন্য মোবাইল করেন, পত্রিকা অফিসে। স্টাফ রিপোর্টার জানার পর এবার বলেন, এখানে সাংবাদিক প্রবেশের অনুমতি লাগে, তাক্ষনিক ভাবে জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোবাইলে জানান, না সাংবাদিকদের কোন অনুমতি লাগে না, এবং প্রবেশ টিকেট লাগে না। জের টেনে সজিব বলেন, ছেলে-মেয়েরা এখানে আসে আনন্দ পূর্তি করার জন্য এটা নিয়ে মিডিয়ার মাথা ব্যাথা কেন? এখানে এমনি চলে আসতেছে এবং চলবে।
ইজারাদার মো. অনিসুর রহমান বলেন, আগের ২০ ভাগের এক ভাগ দর্শনার্থীও এখন আসেনা। আসলে দেখার মতো তেমন কিছু নেই, মানুষ কেন আসবে? বের হয়ে যাওয়ার সময় মানুষ আমাদের গালমন্ধ করে। দেওয়াল ভাঙ্গা, পশু-পাখি নাই, ভিতরে চলাচলের রাস্তা নাই। তিন বছরের জন্য ৩৫ লাখ টাকা দিয়ে লিজ নিয়ে, নিকেই চিন্তায় আছি। তরুণ-তরুণীদের অসালীন কার্মকান্ড নিয়ে তিনি বলেন, ছেলে মেয়েরা আসে, একটু গল্পগুজব করে। তেমন খারাপ কোন কাজ আমরা দেখি না।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ এনামুল হক বশির বলেন, স্টুডেন্টরা অনেক সময় হাপ প্রবেশ ফি দিয়ে প্রবেশ করে, এর আগে আমরা যাচাই করেছি যারা ড্রেস পড়ে ডুকতেছে তাদের সবাই স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী না। চিরিয়াখানাতে প্রাণী নতুন প্রাণী আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আর বোটানিক্যাল গার্ডেনের পুনঃষ্কার কাজ শুরু হয়েছে, ধারাবাহিক ভাবে আমরা এটার উন্নয়নের প্রতি দৃষ্টি রাখছি। তরুণ-তরুণীদের অভিযোগের বিষয়টিও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে আলোচনা করে সমাধান করা হবে। চেয়ারম্যান সাহেব অসুস্থ, তিনি দেশের বাহিরে আছেন।সূত্র: সাপ্তাহিক আমোদ
Leave a Reply